শেয়ারবাজারে টানা দরপতন, নিঃস্ব সাধারণ বিনিয়োগকারীরা

শেয়ারবাজারে টানা দরপতন, নিঃস্ব সাধারণ বিনিয়োগকারীরা

পুঁজিবাজারের দরপতন কোনোভাবেই থামছে না। বাজার স্বাভাবিক করতে প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা কাজে আসছে না। বরং পতনের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। এতে পুঁজি হারিয়ে দিন দিন নিঃস্ব থেকে আরো নিঃস্ব হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

রবিবার দেশের দুই পুঁজিবাজারের দরপতন টানা সপ্তম দিনে গড়িয়েছে। সর্বশেষ সাত কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচক হারিয়েছে ৩৫০ পয়েন্ট। একই অবস্থা দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ব্যাংক ও ব্যাংক বর্হিভূত আর্থিক খাতের অনিয়ম, দুর্নীতি ও খেলাপি ঋণের নেতিবাচক প্রভার পড়েছে পুঁজিবাজারে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ব্যাংক ঋণ ও আমানতের সুদ নয়-ছয় শতাংশ নির্ধারণ করে দেওয়া।

তাদের মতে, আমানতের সুদের হার কমিয়ে দেওয়ায় সাধারণ জনগণ ব্যাংকে টাকা রাখতে নিরুৎসাহিত হবেন। কমে যাবে ব্যাংকের তারল্য প্রবাহ। ফলে দীর্ঘমেয়াদে ব্যাংকগুলোর মুনাফা করার সক্ষমতা কমে যাবে। এতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ দেওয়ার পরিমাণও কমে যাবে। ফলে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিনিয়োগকারীরাও ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। এটি পুঁজিবাজারে দরপতনের জন্য আরো একটি নতুন কারণ।

রবিবার ডিএসইতে ৩৫৫টি কোম্পানির ১৯ কোটি ২৮ লাখ ২৯ হাজার ৯২টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া এসব শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দাম বেড়েছে ৪৬টির, কমেছে ২৮৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টির।

দিনশেষে ডিএসইতে আর্থিক লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৫৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা। দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের কার্যদিবসের চেয়ে ৭০ পয়েন্ট কমে চার হাজার ৪০৯ পয়েন্টে নেমে যায়। এছাড়াও এদিন ডিএসই শরিয়া সূচক ১৬ পয়েন্ট কমে এক হাজার ২৮ পয়েন্ট, ডিএসইএ-৩০ সূচক ১৭ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৪৭৪ পয়েন্টে নেমে যায়।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ২৪০টি কোম্পানির ৮৭ লাখ ৬৯ হাজার ৮৮৫টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া এসব শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দাম বেড়েছে ২৬টির, কমেছে ১৯৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬টির।

দিনশেষে সিএসইতে ১৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এদিন সিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের চেয়ে ১২৩ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৫১৯ পয়েন্টে নেমেছে।