শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা আসতেই ধসে পড়ল শেয়ারবাজার

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা আসতেই ধসে পড়ল শেয়ারবাজার

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সারাদেশের স্কুল-কলেজ, মাদরাসাসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এরপরই সোমবার (১৬ মার্চ) দেশের শেয়ারবাজারে বড় ধস নামে।

করোনা আতঙ্কে দিশেহারা অনেক বিনিয়োগকারী লোকসানে শেয়ার বিক্রি করে দেন। ফলে টপাটপ পড়তে থাকে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। এতে দিনের লেনদেন শেষে মূল্য সূচকে বড় ধস হয়।

অথচ এ দিন লেনদেনের শুরুতে চিত্র ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার মধ্য দিয়ে। এতে মাত্র পাঁচ মিনিটেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৫১ পয়েন্ট বেড়ে যায়। দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায় ২০১টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমে ১২টির।

এ পরিস্থিতিতে দুপুর ১২টার দিকে সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়। এ ঘোষণার পর করোনাভাইরাস নিয়ে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্কের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।

ফলে অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ান। শেয়ার বিক্রির চাপ এতটাই বেড়ে যায় টপাটপ পড়তে থাকে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম। যার প্রভাবে টানা নিচের দিকে নামতে থাকে সূচক।

হু হু করে দাম কমে ৪০টি প্রতিষ্ঠান সার্কিট ব্রেকারের (দাম কমার সর্বোচ্চ) সীমার কাছে চলে আসে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে মাত্র ১০টি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৩৩টির। ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৯৬ পয়েন্ট কমে ৩ হাজার ৭৭২ পয়েন্টে নেমে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৬৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৬৫ পয়েন্টে নেমে গেছে। ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ৫২ পয়েন্ট কমে ৮৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

পতনের এ বাজারে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪০৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৩৭৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৩২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই ৫৭৭ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ৫৭৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৭১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৩৫টির এবং ১১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য প্রকাশ পায়। পরের কার্যদিবসেই করোনাভাইরাস আতঙ্কে শেয়ারবাজারে স্মরণকালের মধ্যে সব থেকে বড় ধস নামে। ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ২৭৯ পয়েন্ট কমে যায়।

বড় ধসের পরের দুই কার্যদিবস (১১ ও ১২ মার্চ) শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়। এর মধ্যে ১১ মার্চ ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বাড়ে ১৪৮ পয়েন্ট। ১২ মার্চ বাড়ে ৭৫ পয়েন্ট। তবে ১৩ মার্চ আবার বড় দরপতন হয়। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক কমে ১০১ পয়েন্ট। দু’দিন সাপ্তাহিক বন্ধ থাকার পর গতকাল রবিবার শেয়ারবাজারে ডিএসইএক্স ১৬০ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে আসে।