করোনা মোকাবেলায় সহায়তা তহবিল বাড়াল বিশ্বব্যাংক

করোনা মোকাবেলায় সহায়তা তহবিল বাড়াল বিশ্বব্যাংক

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের প্রভাবে বিপর্যস্ত নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে জরুরি ভিত্তিতে ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বা ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তা তহবিল অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

৩ মার্চ করোনা সংকট মোকাবেলায় ১ হাজার ২ কোটি ডলারের তহবিল গঠনের ঘোষণা দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। নতুন করে এর সঙ্গে যোগ হল আরও ২০০ কোটি ডলার। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাস মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন।

অর্থ বরাদ্দ বাড়ানোর ফলে মোট আট বিলিয়ন যাচ্ছে বিশ্বব্যাংকের সহযোগী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের (আইএফসি) হাতে।

আইএফসি মূলত বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে কাজ করে থাকে। আইএফসির আট বিলিয়ন ডলারের মধ্যে দুই বিলিয়ন ডলার যাবে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের নতুন ঋণ হিসেবে, বাকি ছয় বিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে পূর্বঘোষিত সহযোগিতা হিসেবে। যদিও এ পর্যন্ত কোন কোন দেশ আইএফসির কাছে সহযোগিতা চেয়েছে তা প্রকাশ করেনি সংস্থাটি।

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট তার বিবৃতিতে বলেন, এ তহবিল করোনা মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও তাদের কর্মীদের অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে সাহায্য করবে।

ডেভিড মালপাস উল্লেখ করেন, আমরা কভিড-১৯ ভাইরাস মোকাবেলায় সদস্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর চাহিদার আলোকে দ্রুত এবং নমনীয় প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতে কাজ করে যাচ্ছি।

জরুরি আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি নীতি সহায়তা, কারিগরি সহায়তা ছাড়াও সম্ভাব্য অন্যান্য সহায়তা করা হবে।

বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, জরুরি এই সহায়তা ঋণ ও অনুদান আকারে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোকে দেয়া হবে। বিশ্বব্যাংক গ্র“পের বিভিন্ন সংস্থা, আইআরবিডি, আইডিএ, আইএফসি এই তহবিল গঠন করতে সহায়তা করবে।

বিশ্বব্যাংকের সদস্য দেশগুলোর এই ক্ষতিরোধে সম্ভাব্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এই জরুরি সহায়তা দেয়া হবে। প্রথম ধাপে ৮০০ কোটি ডলার দ্রুত বিতরণ করা হবে।

সদস্য দেশগুলোর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা শক্তিশালী করা, মহামারী প্রতিরোধ ব্যবস্থা, জনস্বাস্থ্যের উন্নতিসহ অর্থনীতির ক্ষতিরোধে বেসরকারি খাতের সঙ্গেও কাজ করবে বিশ্বব্যাংক।

এদিকে, এপ্রিল মাসে ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বসন্তকালীন সভা ভার্চুয়াল করা হবে। অনলাইনের মাধ্যমে সভায় প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।

এক যৌথ বিবৃতিতে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাস ও আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিভা উল্লেখ করেন, বিশ্বের অন্য সবার মতো আমরাও করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এবং এর মানব ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

ঢাকায় বিশ্বব্যাংক কর্মকর্তাদের বাসায় থেকে কাজ : করোনাভাইরাসের কারণে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশের উন্নয়নসহযোগী সংস্থাগুলো।

এরই মধ্যে বুধবার থেকে অফিসে না এসেও বাসায় বসেই কাজ করতে শুরু করেছেন বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের কর্মকর্তারা। তবে তারা চাইলে অফিসে এসেও কাজ করতে পারবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কার্যালয়ে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের যোগাযোগ কর্মকর্তা মেহেরিন এ মাহবুব যুগান্তরকে জানান, এর আগে দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশে অবস্থিত বিশ্বব্যাংকের অফিসগুলোতে পরীক্ষামূলক বাসায় থেকে কাজ করেছেন কর্মকর্তারা।

ইতিমধ্যেই বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশে কর্মীরা ইচ্ছে করলে বাসায় বসেই অফিসের কাজ করতে পারবেন বলে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার থেকে তা কার্যকর হয়েছে। সব কর্মীকে ইন্টারনেটের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।

এদিকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঢাকা কার্যালয়ের বহিঃসম্পর্ক বিভাগের প্রধান গোবিন্দ বার জানান, সোমবার বাড়িতে থেকে কাজ করার বিষয়ে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে সংস্থাটি।

এরই মধ্যে অফিসের আইটি ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হয়েছে। সব দিক থেকে প্রস্তুত রয়েছে এডিবি। তবে এখনও কোনো নির্দেশনা আসেনি বলে জানান তিনি।

জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) ঢাকা অফিসের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, বাসায় বসে কাজ করার বিষয়ে এখনও কোনো নির্দেশনা আসেনি।

এমজে/