২০০৯ সালের চেয়েও কঠিন আর্থিক মন্দায় প্রবেশ করেছি আমরা: আইএমএফ

২০০৯ সালের চেয়েও কঠিন আর্থিক মন্দায় প্রবেশ করেছি আমরা: আইএমএফ

করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ফলে বিশ্বজুড়ে চলছে লকডাউন, ক্ষেত্র বিশেষে কারফিউ। স্থবির হয়ে পড়েছে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড। বন্ধ হয়ে গেছে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস বন্ধ। গাড়ির চাকা ঘুরছে না। সারা বিশ্ব যেন এক স্বেচ্ছা কারাগারে রূপ নিয়েছে। যে যেখানে আছেন, সেখানেই ‘স্বেচ্ছা কারাবরণ’ বা সেল্ফ আইসোলেশনে চলে গিয়েছেন। আকাশে উড়ছে না বিমান। এক কথায় স্থবির হয়ে আছে বিশ্ব।

এ অবস্থায় অর্থনীতিবিদরা মহা এক সঙ্কটের আশঙ্কা করছেন সামনের দিনগুলোতে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল আইএমএফের প্রধান ক্রিস্টালিয়া জর্জিয়েভা তো বলেই দিয়েছেন, অর্থনৈতিক মন্দায় প্রবেশ করেছি আমরা। তার ভাষায়- এটা স্পষ্ট যে, আমরা একটি অর্থনৈতিক মন্দায় প্রবেশ করেছি। এটা ২০০৯ সালের বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার চেয়েও কঠিন হবে। তিনি অনলাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন।

এই যখন অবস্থা তখনও করোনা ভাইরাসের কোনো স্বীকৃত টীকা বা ওষুধ বের হয় নি। উল্টো, প্রতিটি মুহূর্তেই মৃত্যুর সারি লম্বা হচ্ছে। এর মধ্যে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থা বর্তমানে সবচেয়ে খারাপ। বিশ্বে গত ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে মারা গেছেন কমপক্ষে ৩০০০ মানুষ। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে সারা বিশ্বে মারা গেছেন ২৭ হাজার মানুষ। অনলাইন আনন্দবাজার লিখেছে, গোটা বিশ্বে এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৬ লাখ মানুষ। শুধু শেষ ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ৬৭ হাজারেরও বেশি মানুষ।

শুরুর দিকে বিশেষ গুরুত্ব না দিলেও, এখন করোনা ভাইরাসের নতুন প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠেছে আমেরিকাই। শুক্রবার পর্যন্ত আমেরিকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যাটা সেখানে ৮৫ হাজারে ঠেকে ছিল। রাতারাতি সেই সংখ্যাটা বেড়ে এখন গিয়ে পৌঁছেছে ১ লাখ ৪ হাজারে। এক দিনে ১৮ হাজারের বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন ওই রোগে। সেখানে মৃত্যু হয়েছে দেড় হাজারের বেশি মানুষের। এর মধ্যে শুধু নিউইয়র্কেই মারা গিয়েছেন ৪৫০ জন। মৃত্যুর পরিসংখ্যানের নিরিখে এখনও পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছে ইতালি। সেখানে ৯ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে সেখানে সংক্রমণের তীব্রতায় কিছুটা রাশ টানা গিয়েছে।

মৃতের সংখ্যার নিরিখে ইতালির পরেই রয়েছে স্পেন। সেখানে ইতিমধ্যেই ৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তিন হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে চীনে। ইরানে মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। ফ্রান্সেও মৃত্যু হয়েছে প্রায় দু’হাজার জনের। দুনিয়া জুড়ে প্রায় ১৭৫টি দেশে কার্যত তান্ডব চালাচ্ছে করোনা ভাইরাস।