৩৫ হাজার কর্মী ছাঁটাই ব্রিটিশ ব্যাংক এইসএসবিসির

৩৫ হাজার কর্মী ছাঁটাই ব্রিটিশ ব্যাংক এইসএসবিসির

ব্রিটিশ বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক এবং আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এইচএসবিসি নিজেদের বিশাল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বব্যাপী ৩৫ হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করতে যাচ্ছে।

এইচএসবিসির নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নোয়েল কুইন বলেছেন, বিশ্বজুড়ে ২ লাখ ৩৫ হাজার কর্মী রয়েছে এইচএসবিসির। বিবিসি সেই তথ্য যাচাই করে সত্যতা পেয়েছে।

এদিকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই ব্যাংকটি কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেয়। কিন্তু বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়ার জেরে কর্মী ছাঁটাই স্থগিত রাখা হয়েছিল। তবে ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীণ কাজে লাগানোর ব্যাপারে ভাবনার কথা বলা হচ্ছিল।

কিন্তু এপ্রিল মাসেই এইচএসবিসি জানায়, তারা কর্মী ছাঁটাইয়ের বিষয়টি স্থগিত রেখে দেবে। কারণ এ করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়ার মধ্যে কর্মীরা নতুন করে কাজ খুঁজে পাবে না। আর সেই বিপর্যয়ে কর্মীদের ফেলতে চায় না প্রতিষ্ঠানটি।

মূলত ২০২২ সালের মধ্যে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ কমানোর জন্য প্রতিষ্ঠানটি কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা গত ফেব্রুয়ারিতে করেছে। এছাড়া যেসব খাতে লাভ কম হচ্ছিল সেগুলোও খতিয়ে দেখেছে প্রতিষ্ঠানটি।

অথচ এ প্রতিষ্ঠানে ৩ লাখের বেশি কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু বিশ্বব্যাপী ২০০৮ সালে অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা দেওয়ার পর বেশ কিছু ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছে এইচএসবিসি। কিছু দেশ ছেড়ে চলেও এসেছে; সেসব দেশের মধ্যে রয়েছে ব্রাজিল।

কিন্তু এ অসময়ে কর্মী ছাঁটাইয়ের জন্য এইচএসবিসির সমালোচনাও হচ্ছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন এ ব্যাপারে। ট্রেড ইউনিয়ন ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এ ব্যাপারে মুখ খুলেছেন।

ট্রেড ইউনিয়নের কর্মকর্তা ডমিনিক হুক বলেছেন, একটি প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে, এইসএসবিসি এখন কেন (কর্মী ছাঁটাই করছে)? বর্তমানে এইসএসবিসির বহু কর্মী নানাভাবে ছাড় দিচ্ছে। তারা বাড়ি থেকে কাজ করছে, ঝুঁকি নিয়ে অফিস করছে, গ্রাহকদের সেবা দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন ঐক্যবদ্ধ এইচএসবিসির যেকোনো কর্মীকে চাকরিচ্যুত করার বিরোধিতা অব্যাহত রাখবে এবং কর্মীদের চাকরি সুরক্ষিত কীভাবে হয় তা নিশ্চিত করার জন্য সবার কথা শোনা হবে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকটি রাজনৈতিকভাবেও কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এইচএসবিসির সমালোচনা করেছেন। হংকংয়ের ওপর চীনের নতুন নিরাপত্তা আইন চাপিয়ে দেওয়াকে সমর্থন করে রাজনৈতিক নিশানায় পড়েছে ব্যাংকটি।

যদিও পম্পেও’র বক্তব্যের কোনো জবাব দেয়নি এইচএসবিসি।

এমজে/