পরিচালনা পর্ষদের সদস্য নন, এমন ব্যক্তিরাও কিছু ব্যাংকের পর্ষদ সভায় উপস্থিত থাকছেন। তাঁরা পর্ষদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব রাখছেন। পাশাপাশি পর্ষদের গোপন বিষয়েও আগেভাগে জেনে যাচ্ছেন। এতে ব্যাংক ও আমানতকারী উভয়ই ক্ষতিতে পড়ছে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এ কারণে পর্ষদের সদস্য ছাড়া অন্যদের অংশগ্রহণের বিষয়ে আবারও সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে ২০১৩ সালেও একই বিষয়ে সতর্কতা জারি করা হয়। তবে অনেকেই এ নির্দেশনা মানছে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পরিচালনা পর্ষদ ও পর্ষদের সহায়ক কমিটির সভায় ব্যাংকের পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কোম্পানি সচিব ব্যতীত অন্য কোনো বহিরাগত ব্যক্তি বা শেয়ারহোল্ডারদের উপস্থিতি পরিহারের বিষয়ে আগেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া পর্ষদ বা পর্ষদের সহায়ক কমিটির আহ্বানক্রমে ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা তাঁর সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় উপস্থাপনের জন্য সভায় উপস্থিত থাকতে পারেন, তবে পুরো সময়ের জন্য নয়।
তবে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক জানতে পেরেছে, এই নির্দেশনা লঙ্ঘন করে কিছু ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও পর্ষদের সহায়ক কমিটির সভায় বহিরাগত ব্যক্তি, ব্যাংকের কর্মকর্তা এবং শেয়ারহোল্ডার উপস্থিত থেকে সভায় অংশগ্রহণ করছেন। ফলে এসব সভায় আলোচিত গোপনীয় বিষয়গুলো প্রকাশিত হয়ে যাওয়ায় ব্যাংক-কোম্পানিসহ আমানতকারীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
নির্দেশনা প্রদান করা যাচ্ছে, কোনো পরিস্থিতিতেই বহিরাগত কোনো ব্যক্তি, বিশেষ প্রয়োজনে পর্ষদ ও পর্ষদের সহায়ক কমিটির সদস্যদের আহ্বান ছাড়া ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা এবং শেয়ারহোল্ডার পরিচালনা পর্ষদ ও পর্ষদের সহায়ক কমিটির সভায় উপস্থিত থাকতে পারবেন না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন–পুরোনো অনেক ব্যাংকের বহিরাগত উপস্থিতির তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, যা সঠিকভাবে ব্যাংক পরিচালনার ক্ষেত্রে অন্তরায়। এ জন্য সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। এরপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিচালনা পর্ষদের সদস্য নন, এমন ব্যক্তিরাও কিছু ব্যাংকের পর্ষদ সভায় উপস্থিত থাকছেন। তাঁরা পর্ষদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব রাখছেন। পাশাপাশি পর্ষদের গোপন বিষয়েও আগেভাগে জেনে যাচ্ছেন।
এর আগে বেসরকারি খাতের একাধিক ব্যাংকেও একই ধরনের ঘটনা ঘটে। এ জন্য কিছু ব্যবস্থাও নিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৪ সালে আইনকানুন-নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় উপস্থিত থাকতেন বহিরাগতরা। অভিযোগ পেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শক দল হাতেনাতে প্রমাণও পায় ও সতর্ক করে। মূলত সাবেক পরিচালকেরা সে সময় ব্যাংকটির সভায় উপস্থিত থাকতেন।
একইভাবে চতুর্থ প্রজন্মের এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পর্ষদ সভায় অবৈধভাবে অংশ নিতেন মার্কেন্টাইল ব্যাংকের তৎকালীন এক পরিচালক। এ কারণে ২০১৭ সালে ব্যাংকটির পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন আসে।-প্রথম আলো