দেশে ফেরা ৭১ শতাংশ প্রবাসীর দিন কাটছে আর্থিক দায়-দেনায়

দেশে ফেরা ৭১ শতাংশ প্রবাসীর দিন কাটছে আর্থিক দায়-দেনায়

বিদেশ ফেরত অভিবাসীদের প্রায় ৭১ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। অর্থাৎ ওই অভিবাসীদের দিন কাটছে আর্থিক দায়-দেনায়। তারা না পারছেন সইতে না পারছেন ফের বিদেশ যেতে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম-এর এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য ওঠে এসেছে।

এতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে করোনার প্রকোপ করলে ৮৭ শতাংশই আবার বিদেশে ফিরতে চান।

মঙ্গলবার আইওএম প্রচারিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, র‌্যাপিড অ্যাসেসমেন্ট রাউন্ড-২: নিডস অ্যান্ড ভালনারেবিলিটিস অব ইন্টার্নাল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল রিটার্ন মাইগ্র্যান্টস ইন বাংলাদেশ নামের ওই গবেষণা প্রতিবেদনে প্রথম ধাপের চেয়ে দ্বিতীয় ধাপে বিদেশফেরত অভিবাসীদের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ২০ ভাগ বেড়ে ৭১ শতাংশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে বলে ওঠে এসেছে। প্রথম ধাপের গবেষণায় এই হার ছিল ৫০ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিবাসীদের অর্ধেকের বেশি লাখ টাকার ওপরে ঋণের বোঝা টানছেন।

ঋণ পরিশোধে তারা আবারো টাকা ধার করেছেন এবং স্বাস্থ্য খাতে তাদের খরচের পরিমাণ কমাতে হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কোভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট সমস্যা মোকাবিলায় সরকারি সাহায্যের জন্য আবেদন করতে চেয়েছেন ৬০ শতাংশ বিদেশফেরত অভিবাসী। আর অভ্যন্তরীণ অভিবাসীদের ক্ষেত্রে এই হার ৩৯ শতাংশ।

উভয় অভিবাসীরা বলছেন, অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধান ও ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে টাকা ধার করা, খরচ কমানো এবং অর্থ সহায়তার ওপর তারা নির্ভশীল ছিলেন। এ কাজে বিদেশফেরত ৫০ শতাংশ অভিবাসী অতিরিক্ত ঋণ নিয়েছেন, অভ্যন্তরীন অভিবাসীদের ক্ষেত্রে যার হার ৭১ শতাংশ। তাদের ঋণের পরিমান ২০২০ সালের জুনের চেয়ে সেপ্টেম্বর মাসে বেড়েছে। এছাড়া বিদেশফেরত অভিবাসীদের প্রায় অর্ধেক (৪৭ শতাংশ) চাকরি খুঁজে পেতে সমস্যায় পড়ছেন। যদিও প্রথম ধাপের গবেষণার চেয়ে দ্বিতীয় ধাপে এসে বেকারত্ব ৭৪ শতাংশ থেকে কমে ৬৪ শতাংশে নেমেছে।

বলা হয়েছে, মূলত লকডাউন তুলে দেয়া, সাধারণ কর্মকান্ড উন্মুক্ত হওয়া এবং অন্যান্য বিধিনিষেধ উঠে যাওয়াতেই এই উন্নতি।

প্রতিবেদনটি বলছে, এমন অবস্থায়, ৮৭ শতাংশ বিদেশফেরত অভিবাসী আবার বিদেশে ফিরে যেতে চান। এক্ষেত্রে তাদের পছন্দ সৌদি আরব, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, ইতালি এবং মালয়েশিয়া। অভ্যন্তরীন অভিবাসনেও আগ্রহী ৭৫ শতাংশ।

আইওএম বাংলাদেশ-এর মিশন প্রধান গিওরগি গিগাওরি বলেন, এই তথ্য অভিবাসী কর্মীদের সুরক্ষা দিতে ভবিষ্যতে আমাদের সহয়তা প্রদান প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করবে এবং করোনাভাইরাসের মতো ভবিষ্যত কোন প্রাদুর্ভাব থেকে অভিবাসীদের সুরক্ষা দিতে সহযোগিতা করবে। আমাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনটি বিশ্বব্যাপী ইঙ্গিতগুলিকে সমর্থন করে যে, কোভিড-১৯ মহামারিটি বৈশ্বিক চলাচলের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশের ১২টি উচ্চ অভিবাসন প্রবণ জেলায় দ্বিতীয় দফায় এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়। ২০২০ সালের আগস্ট এবং সেপ্টম্বর মাসে ১,৫৮৪ জন অভিবাসী এতে অংশ নেন যার মধ্যে ৮৭৫ জন বিদেশফেরত, বাকীরা অভ্যন্তরীণভাবে অভিবাসী।