রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি : এফবিআই

রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি : এফবিআই

ঢাকা, ৩১ মার্চ (জাস্ট নিউজ) : বাংলাদেশ ব্যাংকের নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরির ঘটনায় ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা’ রয়েছে বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই’র এক কর্মকর্তা। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা রিজার্ভ চুরির ঘটনায় উত্তর কোরিয়াকে দায়ী করেছিলেন। এতে করে রিজার্ভ চুরিতে জড়িতদের পরিচয়ের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র কর্মকর্তাদের বক্তব্যে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় চুরিটি সংঘটিত হয়েছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের লিগ্যাল অ্যাটাসে হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছেন ল্যামন্ট সিলার। রিজার্ভ চুরির ঘটনায় এফবিআই’র তদন্তে এই কর্মকর্তা যুক্ত ছিলেন। সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক এক আলোচনায় ল্যামন্ট সিলার বলেন, সবাই বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরির কথা জানে। এটি ব্যাংকিং খাতে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হামলার একটি উদাহরণ।

ল্যামন্ট জানান, চুরির জন্য দায়ীরা কেউ যেনও পার না পেয়ে যায় সে জন্য ফিলিপাইন সরকারের সাথে এফবিআই ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে এই ঘটনা শেষ হয়ে যায়নি। আমরা ওই ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করব। আমরা প্রমাণ করব, হামলায় পারদর্শী হলেও শেষ রক্ষা হবে না।’

এর আগে ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এই সাইবার চুরির জন্য উত্তর কোরিয়াকে দায়ী করেন। অন্যদিকে ওয়াল স্ট্রিটের খবরে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের কৌঁসুলিরা চুরির জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তর কোরিয়া ও চীনা দালালদের অভিযুক্ত করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রায় ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরি করে নেয় দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে ২ কোটি ডলার চলে যায় শ্রীলঙ্কা এবং ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চলে যায় ফিলিপাইনের জুয়ার আসরে। এই ঘটনার প্রায় একমাস পর ফিলিপাইনের একটি পত্রিকার সংবাদের মাধ্যমে বিষয়টি বাংলাদেশ জানতে পারে।

এ ঘটনা চেপে রাখতে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে গভর্নরের পদ ছাড়তে বাধ্য হন ড. আতিউর রহমান। বড় ধরনের রদবদল করা হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষপর্যায়ে। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা মানি লন্ডারিং আইনে ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরির অভিযোগ এনে ১৫ মার্চ (২০১৬) মতিঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডিকে। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর সিআইডি এ পর্যন্ত ২০ বার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদালতের কাছ থেকে সময় চেয়ে নিয়েছে। পৃথকভাবে ঘটনাটির আন্তর্জাতিক তদন্ত করছে এফবিআই।

(জাস্ট নিউজ/একে/২২৫০ঘ.)