রুশ সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণায় তেলের দাম কমল

রুশ সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণায় তেলের দাম কমল

ইউক্রেন সীমান্ত থেকে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণায় মঙ্গলবার বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেল প্রতি পাঁচ ডলার কমেছে। তবে পরদিন আজ বুধবার প্রায় দেড় ডলার বেড়েছে।

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন অমিক্রনের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরিস্থিতিতে গত বছরের ৩০ নভেম্বর জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন ঘটেছিল। এরপর মঙ্গলবারই আন্তর্জাতিক বাজারে এক দিনে জ্বালানি তেলের দাম সবচেয়ে কমেছে। আগের দিন সোমবার যুক্তরাজ্যে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম বেড়ে ৯৬ দশমিক ৭৮, আর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুড অয়েল প্রতি ব্যারেলের দাম ৯৫ দশমিক ৯২ মার্কিন ডলারে উঠেছিল। ২০১৪ সালের পর বিশ্ববাজারে এ দুটি দামই ছিল সর্বোচ্চ।

বুধবার প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ৯৪ দশমিক ৭৭ ডলার, ডব্লিউটিআই ক্রুড অয়েল ৯৩ দশমিক ৪২ ডলার হয়েছে।

কোভিড-১৯ মহামারির ধকল কাটিয়ে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া জোরদার হওয়ার ফলে ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ৫০ শতাংশ ও ডব্লিউটিআইর ক্রুড অয়েলের দাম ৬০ শতাংশের মতো বৃদ্ধি পেয়েছিল।

বিশ্বব্যাপী মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়ে আসার পাশাপাশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতি পাওয়ার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় সাম্প্রতিককালে পণ্যটির দামও বাড়ছিল। এমন অবস্থায় রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার রাজনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা বেড়ে যায়। পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে সমর্থন করায় পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করে। এরই মধ্যে ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করে। শুধু তা–ই নয়, রাশিয়া যেকোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে এমন শঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে থাকে। তবে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণায় মঙ্গলবার তেলের ব্যারেলপ্রতি দাম পাঁচ ডলার কমে যায়। শিগগির আরও ১০ ডলারের মতো কমার আশাও করেন কেউ কেউ। তবে জ্বালানি তেলের বাজার এখনো অস্থিতিশীল। এর ধারাবাহিকতায় শিগগির প্রতিব্যারেল তেলের দাম ১০০ ডলারে উঠে যেতে পারে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক অব আমেরিকা বলছে, সরবরাহে বিঘ্ন ও ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে চলতি ২০২২ সালে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে ১২০ ডলারে উঠতে পারে। সুইজারল্যান্ডের বিনিয়োগ ব্যাংক ইউবিএস অবশ্য মনে করে, প্রতি ব্যারেল তেল ৮০-৯০ ডলারে বিক্রি হবে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের মরগ্যান স্ট্যানলির পূর্বাভাস হচ্ছে, ব্রেন্ট তেলের ব্যারেলপ্রতি দাম ১০০ ডলারে উঠতে পারে। আল–জাজিরা, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড ও রয়টার্স