বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের পূর্ণাঙ্গ তথ্য চায় আইএমএফ

বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের পূর্ণাঙ্গ তথ্য চায় আইএমএফ

রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের অবস্থা জানতে চাওয়ার পর বাংলাদেশ কী পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ নিয়েছে তার ডাটাবেজের তথ্য চাইলো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এ ছাড়া ডাটাবেজে কোন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় সেটিও জানতে চেয়েছে বাংলাদেশ সফরে আসা এ প্রতিনিধি দল। বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে এক বৈঠকে এসব তথ্য জানতে চেয়েছে আইএমএফের সদস্যরা।

এ প্রসঙ্গে ইআরডি সচিব শরিফা খান সাংবাদিকদের বলেন, আইএমএফ আমাদের কাছে ঋণ সংক্রান্ত ডাটাবেজ নিয়ে জানতে চেয়েছে। আমরা তা নিয়েই আলোচনা করেছি। রিপেমেন্ট নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে শরিফা খান বলেন, আমাদের রিপেমেন্ট এখন পর্যন্ত ক্লিয়ার। এ নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। তিনি জানান, তারা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছে ডাটাবেজের কোন পদ্ধতি ব্যবহার করি। আমরা বলেছি, বাংলাদেশ আংকটাডের পদ্ধতি অনুসরণ করে।

এর আগে গত বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে ব্যাংক খাতের উল্লেখযোগ্য সংস্কারসহ সব ধরনের শর্ত প্রতিপালন হচ্ছে কিনা -তা খতিয়ে দেখতে ‘সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনের খসড়া চেয়েছিল আইএমএফ। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ নিয়ে সংস্থাটি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে জানতে চেয়েছে বর্তমান রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের সর্বশেষ অবস্থা।

ইআরডি’র এক সূত্র জানায়, এ প্রতিনিধি দল রাশিয়ার সঙ্গে অ্যাডজাস্টমেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে কিনা তাও জানতে চেয়েছে। জানানো হয়- সেটি খোলা হয়েছে। আর সংশোধিত উন্নয়ন বাজেট নিয়ে জানতে চেয়েছে তারা।
আগামী অক্টোবরে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশে আসবেন। তখন নীতিগত সিদ্ধান্ত নেবেন তারা। এর আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না।

জানা গেছে, আইএমএফের ঋণ নিতে ছোট-বড় ৩৮টি শর্ত পূরণ করতে হবে বাংলাদেশকে। শর্তগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই আর্থিক খাতের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। আর্থিক খাতের মধ্যে আবার বড় অংশজুড়ে রয়েছে ব্যাংক খাত। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্বে। এর মধ্যে গত মার্চ পর্যন্ত অর্জন এবং আগামী জুন ও সেপ্টেম্বরের মধ্যে যেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে সেগুলোর বাস্তবায়ন পরিস্থিতি যাচাই করছে এবারের মিশন।

এ ছাড়া ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে যেসব শর্ত বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছে সরকার, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য আসছে বাজেটে কী কী উদ্যোগ থাকছে, তাও পর্যালোচনা করা হবে।

আইএমএফ গত ৩০শে জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। এর মধ্যে এক্সটেনডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) বা বর্ধিত ঋণসুবিধা ও এক্সটেনডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএএফএফ) বা বর্ধিত তহবিল সুবিধার আওতায় ৩৩০ কোটি ডলার এবং নতুন গঠিত তহবিল রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় আরও ১৪০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করা হয়েছে। ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনের তিনদিন পরই প্রথম কিস্তিতে ছাড় করে ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার। ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে মোট সাত কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ দেবে আইএমএফ।