সরকারি ব্যাংক চাকরিজীবীদের গৃহঋণ

পরিপত্র জারির পরদিনই প্রত্যাহার

পরিপত্র জারির পরদিনই প্রত্যাহার

ঢাকা, ১৮ মে (জাস্ট নিউজ) : সরকারি ব্যাংকের চাকরিজীবীদের গৃহঋণের পরিপত্র জারির একদিনের মাথায় প্রত্যাহার করা হয়েছে। বুধবার অর্থমন্ত্রীর নির্দেশে এটি প্রত্যাহার করা হয়। আগের দিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ পরিপত্র জারি করেছিল।

সূত্র মতে, সরকারি ব্যাংক থেকে শুধু কর্মকর্তাদের গৃহনির্মাণ ঋণ নেয়ার বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এতে বলা হয়, শুধু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ৫ শতাংশ সুদে সর্বোচ্চ ১ কোটি ও সর্বনিম্ন ৬০ লাখ টাকা ঋণ নিতে পারবেন।

অপরদিকে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য পাঁচ শতাংশ সুদে গৃহঋণের নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে সরকার, যা প্রজ্ঞাপন জারির অপেক্ষায় আছে। সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহঋণ নীতিমালা জারির আগেই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণের প্রজ্ঞাপনটি ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করে।

এ প্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী পরিপত্রটি দ্রুত প্রত্যাহার করার জন্য বুধবার আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. ইউনুসুর রাহমানকে নির্দেশ দেন। এ কারণে পরিপত্রটি প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।

সূত্র আরো জানায়, সরকারের যে কোনো বিভাগেরই এ ধরনের পরিপত্র জারির আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের মতামত নেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ তা নেয়নি। এদিকে ‘সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহনির্মাণ ঋণ প্রদান সংক্রান্ত নীতিমালা-২০১৮’-এর একটি খসড়া গত মাসে চূড়ান্ত করেছে অর্থ বিভাগ। অনুমোদনের জন্য এই খসড়া এখন মন্ত্রিসভার বৈঠকে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

অর্থ বিভাগের চূড়ান্ত নীতিমালার আওতায় জাতীয় বেতন স্কেলের গ্রেডভেদে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ এবং সর্বনিম্ন ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেয়ার সুযোগ রয়েছে।

সেখানে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জারি করা পরিপত্রে সর্বোচ্চ ১ কোটি ও সর্বনিম্ন ৬০ লাখ টাকা ঋণ নেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছিল।

সব সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য অর্থ বিভাগ কর্তৃক চূড়ান্ত নীতিমালা অনুযায়ী, জাতীয় বেতন কাঠামোর পঞ্চম গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেডভুক্ত কর্মকর্তা, যাদের বেতন স্কেল ৪৩ হাজার বা এর বেশি তারা প্রত্যেকে ঢাকাসহ সব সিটি কর্পোরেশন ও বিভাগীয় সদরে গৃহনির্মাণে ঋণ পাবেন ৭৫ লাখ টাকা।

জেলা সদরে এর পরিমাণ হবে ৬০ লাখ টাকা এবং অন্যান্য এলাকায় ৫০ লাখ টাকা। বেতন কাঠামোর নবম গ্রেড থেকে ষষ্ঠ গ্রেড পর্যন্ত বা যাদের মূল বেতন ২২ হাজার থেকে ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা, তারা ঢাকাসহ সব সিটি কর্পোরেশন ও বিভাগীয় সদর এলাকার জন্য ৬৫ লাখ টাকা, জেলা সদরের জন্য ৫৫ লাখ এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ৪৫ লাখ টাকা ঋণ পাবেন।

দশম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত যাদের মূল বেতন ১১ হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকা তারা ঢাকাসহ সব সিটি কর্পোরেশন ও বিভাগীয় সদরের জন্য ৫৫ লাখ টাকা, জেলা সদরের জন্য ৪০ লাখ টাকা এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ৩০ লাখ টাকা ঋণ পাবেন।

১৪ তম থেকে ১৭ তম গ্রেড বা নয় হাজার থেকে ১০ হাজার ২০০ টাকা বেতন স্কেলে ঢাকাসহ সব সিটি কর্পোরেশন ও বিভাগীয় সদরের জন্য ৪০ লাখ টাকা, জেলা সদরের জন্য ৩০ লাখ টাকা এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ২৫ লাখ টাকা ঋণ পাবেন।

১৮তম থেকে ২০তম গ্রেড বা আট হাজার ২৫০ টাকা থেকে আট হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত মূল বেতন পান এমন কর্মচারীরা ঢাকাসহ সিটি কর্পোরেশন ও বিভাগীয় সদরের জন্য গৃহনির্মাণ ঋণ পাবেন ৩০ লাখ টাকা। জেলা সদরে এটি হবে ২৫ লাখ টাকা এবং অন্যান্য এলাকার জন্য পাবেন ২০ লাখ টাকা।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১২২৮ঘ.)