রবিবার থেকে ব্যাংকের নয়-ছয় সুদহার কার্যকর

রবিবার থেকে ব্যাংকের নয়-ছয় সুদহার কার্যকর

ঢাকা, ১ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : ব্যাংক মালিকদের ঘোষণা অনুযায়ী রবিবার থেকে কার্যকর হচ্ছে ব্যাংকের সুদ হার। ঘোষণা অনুযায়ী ঋণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ এবং আমানতের ক্ষেত্রে ৬ শতাংশ সুদ হার কার্যকর করা হবে। তবে এটি সম্ভব কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ইতোমধ্যে একযোগে না পারলেও পর্যায়ক্রমে সুদহার কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন ব্যাংকের এমডিরা।

গত ২০ জুন এক বৈঠক থেকে ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেয় বেসরকারি ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী ১ জুলাই থেকে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদে ঋণ এবং ছয় শতাংশ সুদে তিন মাস মেয়াদি আমানত নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকের মালিকদের এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন অনেক কঠিন হবে। আমানতের সুদহার এত কমানো উচিত হবে না। কমালেও আমানত সংগ্রহ করাটা চ্যালেঞ্জ হবে। ঋণের সুদ হার কমিয়ে আনতে আমানতের সুদহার কমানো যুক্তিসঙ্গত নয়। বরং ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণ, বিলাসী খরচ, উচ্চ মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আনতে হবে।

সুদহার কমানোর বিষয়ে গত ২৭ জুন বৈঠকে বসেন ব্যাংকের এমডিরা। তারা সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে রাজি আছেন। তবে ১ জুলাই থেকে সব ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ হবে না। প্রথম পর্যায়ে শুধু শিল্প ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামানো হবে। পর্যায়ক্রমে অন্য ক্ষেত্রেও সুদহার কমানো হবে। তবে ক্রেডিট কার্ড বা অন্য ভোক্তা ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনার সম্ভাবনা কম। এর জন্য শুধু তিন মাস নয়, সব আমানতের ক্ষেত্রে সুদহার হবে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, সুদহার কমানো হবে এটি আমাদের সিদ্ধান্ত। যাই ঘটুক সুদহার আমরা কমিয়ে আনব। তবে এটির পেছনে বাস্তবসম্মত কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ১০ থেকে ১২ শতাংশ সুদের আমানত রয়েছে। কস্ট অব ফান্ড যোগ করলে আরো বেশি। এ ছাড়া অনেক ব্যাংকের ঋণ-আমানত অনুপাত (এডিআর) শেষ সীমায় রয়েছে। তারাও ঋণ বিতরণ করতে পারছে না। সব মিলিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যে এটি করতে হচ্ছে।

এদিকে আগামীকাল সোমবার ব্যাংকার্স সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এখানে ব্যাংকের এমডিদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। ওই বৈঠকেও সুদহার কমানোর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

এপ্রিলে ব্যাংকগুলোর ঘোষিত সুদহার বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, কৃষি ও রপ্তানির ঋণের সুদ হার ৭ থেকে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ। শিল্প খাতে চলতি ও মেয়াদে ঋণের ৯ থেকে ১১ শতাংশ পর্যন্ত সুদে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে কোনো কোনো ব্যাংক ১৭ শতাংশ পর্যন্ত সুদ আদায় করছে। কিন্তু এসএমই ঋণ, ভোক্তা ঋণের সুদ হার ১৫ থেকে ২২ শতাংশ পর্যন্ত রয়েছে। এ ছাড়া ক্রেডিট কার্ডের সুদহার রয়েছে সাড়ে ৩১ শতাংশ পর্যন্ত। সুত্র: দৈনিক আমাদর সময়।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/১০৪৫ঘ.)