খ্যাতিমান ব্যান্ড শিল্পী জর্জ হ্যারিসনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

খ্যাতিমান ব্যান্ড শিল্পী জর্জ হ্যারিসনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ঢাকা, ২৯ নভেম্বর (জাস্ট নিউজ) : জর্জ হ্যারিসন। ‘বিটলস’ ব্যান্ডের খ্যাতিমান শিল্পী। শুধু তাই নয়, পৃথিবীর সেরা ১০০ জন গিটারিস্টের মধ্যে অন্যতম, যার অবস্থান ১১ নম্বরে। ১৯৪৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেছিলেন জর্জ হ্যারিসন। ব্রিটেনের ওয়েভারট্রি অঞ্চলে তার বাড়ি। লিভারপুল অঞ্চলের বিখ্যাত জায়গা এটি। হ্যারিসনের এই পুরনো বাড়ি দেখতে প্রচুর পর্যটক ভিড় জমান সেখানে।

বাবার এক বন্ধুর কাছে জর্জের প্রথম গিটারের হাতেখড়ি। ১৩ বছর বয়সে প্রথম গিটার হাতে পান তিনি। এখনো সেই গিটারটি আছে। হাইস্কুলে পড়ার সময়েই জর্জ ঠিক করে ফেলেন তিনি সংগীত নিয়েই থাকবেন। রক অ্যান্ড রোল-ই হবে তার জীবন। ১৯৫৬ সালে বন্ধু ম্যাকার্টনির সঙ্গে লেননের প্রথম ব্যান্ড ‘কোয়ারিমেন’-এ যোগ দেন তিনি।

১৯৬০ সালে ‘কোয়ারিমেন’ই নাম বদলে হয়ে যায় ‘বিটলস’৷ ব্যান্ডের লিড গিটারিস্ট জর্জ হ্যারিসন। ম্যাকার্টনি আর লেনন গায়ক। জর্জও অবশ্য বেশ কয়েকটি গান গেয়েছেন বিটলসে।

সারা পৃথিবীতেই শো করেছে বিটলস। বিটলসে থাকাকালীন জর্জ বেশ কিছু গানও লিখেছিলেন। কিন্তু তার অভিযোগ ছিল, তার লেখা অধিকাংশ সময়েই বাতিল করে দিতেন লেনন এবং ম্যাকার্টনি। তবুও তার লেখা সাড়া জাগিয়েছিল৷

ভারতীয় সংস্কৃতি নিয়ে হ্যারিসনের ঝোঁক ছিল চিরকালই। ১৯৬৬ সালে বিটলস ভারতে আসে। মহাঋষি মহেশ যোগীর কাছে ধ্যান শিখতে যান সকলেই। ব্যান্ডের বাকি সদস্যরা দ্রুত আগ্রহ হারালেও হ্যারিসন বুঁদ হয়ে যান ধ্যানে। পরবর্তী জীবনে ‘হরে কৃষ্ণ’ আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ছিলেন হ্যারিসন।

ব্যান্ডের ওপর রাগ করে ১৯৬৮ সালে প্রথম সোলো অ্যালবাম বের করেন জর্জ, ‘ওয়ান্ডারওয়াল মিউজিক’।

বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে জর্জ হ্যারিসনের নাম। ১৯৭১ সালে রবিশংকরের সঙ্গে জর্জ আয়োজন করেন ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’। পাকিস্তান সেনাবাহিনী মুক্তিকামী বাঙালিদের বিরুদ্ধে যে গণহত্যা চালাচ্ছিল তা বিশ্ববাসীকে জানাতে এবং ভারতে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে ওই কনসার্টের আয়োজন হয়েছিল। বব ডিলান, রিঙ্গো স্টার, রবিশংকর, এরিক ক্ল্যাপটন সকলেই অংশ নিয়েছিলেন ওই কনসার্টে।

মাত্র ৫৮ বছর বয়সে ২০০১ সালের ২৯ নভেম্বর মৃত্যু হয় হ্যারিসনের। মৃত্যুর আট বছর পর হলিউড তাকে ‘স্টার অন দ্য ওয়াক অফ ফেম’ সম্মান দেয়।

উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে হ্যারিসনের গলায় ক্যান্সার ধরা পড়ে। তখন তাকে রেডিওথেরাপি দেওয়া হয়, যা সফল হিসেবে মনে করা হয়েছিল। ২০০১ সালে তার ফুসফুস থেকে ক্যান্সার টিউমার অপসারণ করা হয়। ২০০১ সালের ২৯ নভেম্বর হ্যারিসন ৫৮ বছর বয়সে মেটাস্টাটিক নন-স্মল সেল লাং ক্যান্সারে মারা যান। হলিউড ফরএভার সিমেট্রিতে তাকে দাহ করা হয়। এরপর তার দেহভস্ম ভারতের কাশীর কাছে গঙ্গা ও যমুনা নদীতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। পারিবারিক লোকেরা ভারতে হিন্দুরীতিতে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন।

(জাস্ট নিউজ/এমজে/১২৪০ঘ.)