হলুদসন্ধ্যায় বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদলেন নুসরাত

হলুদসন্ধ্যায় বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদলেন নুসরাত

টালিউডের জনপ্রিয় নায়িকা ও পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাট থেকে সদ্য নির্বাচিত সংসদ সদস্য নুসরাত জাহান বিয়ে করছেন।তার গায়ে হলুদও হয়ে গেছে। শুক্রবার তার কলকাতার বাড়িতে ছিল হলুদ সন্ধ্যা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হলুদের ছবি পোস্ট করেছেন এই নায়িকা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জিনিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাবা দিবস সামনে রেখে শনিবার নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে একটি ছবি শেয়ার করেন নুসরাত। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, গায়ে হলুদ মেখে বাবাকে জড়িয়ে ধরে রয়েছেন কাঁদছেন নুসরাত।

ছবির ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘তুমি আমাকে মানবিকতা শিখিয়েছ... আমার খুশির জন্য সব কিছু করেছ...আমি কখনো তোমাকে এবং তোমার আদর্শকে ছোট করব না... তোমাকে খুব ভালোবাসি বাবা...সব মেয়ে যেন তোমার মতো বাবা পায়... হ্যাপি ফাদার্স ডে..!’

অন্য একটি ছবিতে দেখা গেছে, নুসরাতের গালে, কপালে হলুদ। লাল ওড়নায় জরির ফুল। মানানসই লাল পোশাক। বেল ফুলের মালা, সোনার গয়নায় গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে সেজেছিলেন নুসরত। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তাঁর প্রিয় বন্ধু মিমি চক্রবর্তী। বুধবার নুসরতকে আইবুড়োভাতও খাইয়েছিলেন তিনি।

নুসরাতের হবু বর কলকাতার সফল উদ্যোক্তা নিখিল জৈনকে বিয়ে করছেন নুসরাত। তুরস্কের ইস্তাম্বুলকে বিয়ের জন্য বেছে নিয়েছেন তারা। হবু বর-কনে সেখানে যাচ্ছেন ১৫ জুন রাতে। বিয়ের আগে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে বোদরুমে। ১৭ তারিখে ইয়ট পার্টি, ১৮য় মেহেন্দি ও সঙ্গীত। বিয়ের দিন সকালেও হলুদের অনুষ্ঠান রয়েছে। বিয়ের পরে রিসেপশন। এতেই শেষ নয়, ২০ জুন হবে হোয়াইট ওয়েডিং। দেশে ফিরে ২৫ জুনের পরে আইনি মতে বিয়ে সারবেন নুসরত-নিখিল।

নুসরাত আর নিখিলের আর বিয়ের সব অনুষ্ঠান হবে তুরস্কের বোদরুম শহরে পাম অ্যাভিনিউয়ের ইডেন ইম্পেরিয়ালে।

নিখিলের সঙ্গে নুসরাতের মন দেয়ানেয়া চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। ১৫ জুন রাতে ইস্তানবুল যাচ্ছেন নুসরাত আর নিখিল জৈন। তার পরিবার, বন্ধু, সহকর্মী ও মেকআপ টিমের ৩০ জন যাচ্ছেন সেখানে। অনুষ্ঠানের খাবারের মেন্যুতে থাকবে ভারতীয়, কন্টিনেন্টাল আর তুরস্কের আঞ্চলিক খাবার।

বিয়ের পর ইউরোপের কোনো একটি জায়গায় মধুচন্দ্রিমায় যাবেন নবদম্পতি। নুসরাত জাহান ও নিখিল দম্পতি কলকাতায় ফিরবেন ২৫ জুনের আগেই। কারণ ২৫ জুন দিল্লিতে সংসদ সদস্য হিসেবে লোকসভার প্রথম অধিবেশনে যোগ দেবেন তৃণমূলের এ নেত্রী।

৪ জুলাই কলকাতার একটি অভিজাত হোটেলে নুসরাত ও নিখিল জৈনের বিবাহোত্তর সংবর্ধনার আয়োজন করা হচ্ছে। সেখানে বলিউড, টালিউডের তারকা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।

নুসরাত জাহানের হবু বর নিখিল জৈন কলকাতার ছেলে। তবে চলচ্চিত্রের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই তার। এমপি বিড়লা ফাউন্ডেশনে পড়াশোনার পর যুক্তরাজ্যের ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্টের ওপর পড়াশোনা করেছেন।

নিখিলের সঙ্গে নুসরাতের পরিচয় হয় গত বছর পূজার আগে। ব্যবসায়ী নিখিল জৈনের শাড়ির ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন করেছিলেন নুসরাত জাহান। এই কাজের সূত্রেই তাদের পরিচয়। অল্প দিনেই সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়। এর পর তারা দুজনে মিলেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন।

সম্প্রতি অনামিকায় বাগদানের আংটি পরা একটি ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন নুসরাত জাহান। ছবিতে দেখা যায়, তার হাত টেনে ধরছেন বয়ফ্রেন্ড। সঙ্গে লিখেছেন, ‘বাস্তব যখন স্বপ্নের চেয়েও সুন্দর...।’

জানা গেছে, নুসরাত জাহানের বিয়ের মেকআপের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সায়ন্তন আর হেয়ার স্টাইলের জন্য শর্মিষ্ঠাকে। নুসরাত জাহানের বন্ধু স্টাইলিস্ট স্যান্ডিকে সবকিছু দেখাশোনা করবেন। বিয়েতে সব্যসাচীর ডিজাইন করা লেহেঙ্গা পরবেন নুসরাত জাহান। নুসরাতের বর নিখিলের পোশাকও ডিজাইন করেছেন সব্যসাচী।

আরও জানা গেছে, বিয়ের অনুষ্ঠানে নুসরাত জাহানের গায়ে থাকবে কিছু পুরনো পারিবারিক গহনা। বোহেমিয়ান থিমে সাজানো হবে মেহেদি অনুষ্ঠান। সংগীতের জন্য তিনি ইন্দো-ওয়েস্টার্ন পোশাক বেছে নিয়েছেন আর গায়েহলুদে উজ্জ্বল হলুদ রঙের পোশাক পরবেন। হোয়াইট ওয়েডিংয়ের জন্য নুসরাত বেছে নিয়েছেন মিন্ট গ্রিন এবং সাদার মিশেলে পোশাক।

কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত ভারতের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাট কেন্দ্র থেকে সর্বকনিষ্ঠ এমপি নির্বাচিত হন নুসরাত। ২৮ বছর বয়সেই এমপি হয়ে সংসদে যাচ্ছেন তিনি।

নুসরাত পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট লোকসভা আসন থেকে সাড়ে তিন লাখের বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিজেপির সায়ন্তন বসু।

গত দুই মাস ভোটের কারণে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন নুসরাত। তাই বিয়ে নিয়ে আলোচনার সময়ই পাননি। ভোটের ঝামেলা শেষ হতেই কলকাতার পার্ক সার্কাসের ব্রড স্ট্রিটের বাড়িতে তার বিয়ে নিয়ে শুরু হয় চূড়ান্ত ব্যস্ততা।

এমজে/