‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্ট ২০১৯’

ইউরো-এশিয়ার লোকজ সুরের মুগ্ধতায় শুরু

ইউরো-এশিয়ার লোকজ সুরের মুগ্ধতায় শুরু

একদিকে ইউরোপ, আরেকদিকে এশিয়া। অন্যদিক দিয়ে বয়ে গেছে কৃষ্ণসাগর। জর্জিয়া এমনিতেই নিজস্ব সংস্কৃতির আলোয় উদ্ভাসিত।

তার ওপর রোমান, বাইজানটাইন শাসনের ফলে তাদের জীবনাযাপনে প্রবেশ করেছে সেসব সাম্রাজ্যের নানা অনুষঙ্গ। সবকিছু মিলিয়ে এক অনন্য ধারা তৈরি হয়েছে জর্জিয়ার লোকজ সংস্কৃতিতে।

এটিই বারবার ফুটে উঠছিল জর্জিয়ার লোকজ গানের দল শেভেনেভুরেবির গানে। একেবারেই নিজস্ব কিছু বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে তাদের নিজস্ব ভাষার গান ছিল মনোমুগ্ধকর।

ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসঙ্গীত উৎসবের প্রথম দিনে আলো ছড়িয়েছে জর্জিয়ার এই দলটি। এদিন দেশীয় শিল্পীদের পাশাপাশি ছিল ভারতের লোকগানের অন্যতম শিল্পী দালের মেহেন্দীর পরিবেশনা।

রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার উৎসবের পঞ্চম আসরের পর্দা ওঠে। সান কমিউনিকেশন্সের আয়োজনে মেরিল নিবেদিত এই লোকসঙ্গীত উৎসবে হেমন্তের কুয়াশার মাঝে মানুষ যেন শেকড়ের টানে ছুটে এসেছিলেন।

যে গান আমাদের অস্তিত্বে মিশে রয়েছে, সেই লোকগানকে নিয়ে এই বিশাল আয়োজনে অন্যবারের মতো এবারও দর্শক-শ্রোতারা এসেছিলেন দল বেঁধে।

দিনের শুরুতেই নৃত্য নিয়ে মঞ্চে আসে দেশের প্রেমা ও ভাবনা নৃত্য দল। ‘আমরা রব না রব না গো’ গানের সঙ্গে শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করেন।

এরপর ছিল আরও কয়েকটি গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনা। এরপরই মঞ্চে আসে জর্জিয়ার দল শেভেনেভুরেবি।

চমৎকার সব মেলোডিতে ভরা তাদের পরিবেশনার মূলে ছিল নিজস্বভাবে তৈরি পলিফনিক, যেখানে যন্ত্রে ও কণ্ঠে তিনটি ভিন্ন পরিবেশনা একসঙ্গে চলতে থাকে।

কিন্তু একটি সুরের মধ্য দিয়েই ধাবিত হয় পুরো গানটি। দলটির পরিবেশনার পর হয় উৎসবের উদ্বোধনী আয়োজন।

সুবীর নন্দী, বারী সিদ্দিকী, শাহনাজ রহমতউল্লাহ, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, ফকির আবদুর রব শাহ এবং আইয়ুব বাচ্চু- বাংলা গানের এই ছয় মহারথীর ওপর নির্মিত একটি ভিডিওচিত্র দেখানো হয়।

এই গুণী শিল্পীদের উৎসর্গ করা হয় ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোকফেস্ট-২০১৯’।

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, লোকসঙ্গীত জীবনের কথা বলে। এই গানের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ের অব্যক্ত কথাগুলো বলা হয়।

সঙ্গীতচর্চা ও সংস্কৃতিচর্চা তরুণ সমাজকে বিপথে যেতে দেয় না। সম্মানিত অতিথি হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, লোকসঙ্গীত আমাদের হাসি-বেদনার বহিঃপ্রকাশ। এই গানের সম্পর্ক আমাদের নাড়ির সঙ্গে।

স্বাগত বক্তব্যে সান ফাউন্ডেশন ও সান কমিউনিকেশন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান অঞ্জন চৌধুরী বলেন, লোকসঙ্গীত হচ্ছে আমাদের প্রাণের গান। এই সঙ্গীতকে আমরা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চাই।

আমরা খুব আনন্দিত যে, সারা বিশ্বের মানুষ এখন আমাদের এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে। উদ্বোধনী আয়োজনের পর মঞ্চে আসেন শাহ আলম সরকার।

তিনি একে একে পরিবেশন করেন ‘দয়াল নবী গো’, ‘আমি যারে ভালোবাসি’, ‘ও কালা বাঁশি’, ‘আমি তো মরে যাব’সহ বেশকিছু লোকগান। এরপরই মঞ্চে আসেন পাঞ্জাবি ভাংড়ার বিখ্যাত শিল্পী দালের মেহেন্দী।

শুরুতেই পরিবেশন করেন ‘নারে নারে নারে’। এরপর গেয়ে শোনান ‘হায়ো রাব্বা হায়ো রাব্বা’, ‘সারে দিল মে ছুরিয়া চালাইয়্যা’সহ বেশকিছু গান।

এমজে/