সমঝোতা নয়, সমাধান হবে আদালতে: গাজী রাকায়েত

সমঝোতা নয়, সমাধান হবে আদালতে: গাজী রাকায়েত

ঢাকা, ২৭ মার্চ (জাস্ট নিউজ) : অভিনেতা ও নাট্যকার গাজী রাকায়েত ও দুই তরুণীর করা দুটি মামলার বিষয়টি তদন্ত শেষে আদালতের মাধ্যমেই সমাধান করতে হবে। এ ক্ষেত্রে নিজেদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই। গণমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসির) অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুল ইসলাম।

নাজমুল ইসলাম জানান, অভিযোগ অনুযায়ী গাজী রাকায়েত যে ফেসবুক আইডিটি গত ১৫ মার্চ বন্ধ করে দিয়েছেন, অনুসন্ধানে তার আইপি পাওয়া গেছে সিঙ্গাপুরে। দুটি মামলা নিয়েই তদন্ত চলছে। এই অবস্থায় শোনা যাচ্ছে তারা (গাজী রাকায়েত ও অপরাজিতা সংগীতা ও তার বান্ধবী) নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করেছেন। এটা সমঝোতার কোনো বিষয় নয়। আদালতের মাধ্যমেই তাদের বিষয়টি সমাধান করতে হবে।

গাজী রাকায়েত পরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি। মঙ্গলবার ফেসবুকে তিনি দাবি করেন মামলাগুলো নিয়ে ‘উভয় পক্ষে’র সমঝোতা হয়েছে। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক ‘স্ট্যাটাসে’র মাধ্যমে এসব তথ্য জানান।

গাজী রাকায়েত ফেসবুকে লেখেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ডিভিশনের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে আমার অ্যাকাউন্ট নিয়ন্ত্রণ করেছে অন্য কেউ, যা আমি ৬ মার্চ তারিখেই আমার ফেসবুকের মূল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে জানাই আমার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে। সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ডিভিশনের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. নাজমুল ইসলামের কাছ থেকে জানতে পারি, আমার আইডিতে সন্দেহজনক আইপির মুভমেন্ট পাওয়া গেছে।’ তিনি বলেন, ‘ফেসবুক থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী উক্ত আইডিগুলো সিঙ্গাপুরের। আমি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ইউনিটকে যে তারা দ্রুত সময়ে তদন্তটি সম্পন্ন করতে পেরেছে। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, সিঙ্গাপুর পুলিশ ও ইন্টারপোলের সহায়তায় অপরাধী শনাক্ত করা হবে।’

গাজী রাকায়েত দাবি করেন, ওই দুই নারী এবং তার মধ্যে মামলা প্রত্যাহার করার একটি ‘চুক্তি’ হয়। এ বিষয়ে একটি ‘যৌথ ঘোষণা’ও দেওয়া হয় বলে তিনি জানান।

গত ১৬ মার্চ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় অপরাজিতা সংগীতার বিরুদ্ধে মামলা করেন গাজী রাকায়েত।

গত ২২ মার্চ গাজী রাকায়েতের বিরুদ্ধে মামলা করেন ‘হয়রানির শিকার’ অপরাজিতা সংগীতার বান্ধবী। ওই মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে ‘অশালীন’ বার্তা পাঠান গাজী রাকায়েত। ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে পাঠানো সেই ‘অশ্লীল, অনৈতিক, ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিপন্থী, যৌন হয়রানিমূলক প্রস্তাবের’ মাধ্যমে তিনি ব্যক্তিগত জীবনে মানসিক ও সামাজিকভাবে অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ ধরনের বার্তার ‘স্ক্রিনশট’ (কথোপকথনের হুবহু ছবি) ওই তরুণীর এক বান্ধবী অপরাজিতা সংগীতা ফেসবুকে প্রকাশ করলে তার (অপরাজিতা সংগীতা) বিরুদ্ধে রাজধানীর আদাবর থানায় মামলা দায়ের করেন গাজী রাকায়েত। গত ১৬ মার্চ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় ওই মামলা দায়ের করেন তিনি।

ওই মামলা প্রত্যাহারের জন্য একাধিক সংগঠন বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ওই মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে গত ২১ মার্চ ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে শাহবাগ’ ব্যানারে বিক্ষোভ করে শতাধিক মানুষ। মামলা প্রত্যাহারের জন্য গাজী রাকায়েতকে ৪৮ ঘণ্টা সময়ও বেঁধে দেয় বিক্ষোভকারীরা।

(জাস্ট নিউজ/একে/২২৫০ঘ.)