যে ঘটনায় কলকাতা ছেড়ে পালিয়েছিলেন উত্তম কুমার

যে ঘটনায় কলকাতা ছেড়ে পালিয়েছিলেন উত্তম কুমার

আর সবাই নায়ক হলেও উত্তম কুমার ছিলেন মহানায়ক। সুদর্শন চেহারা আর অভিনয় নৈপুণ্যে জয় করেছিলেন কোটি কোটি মানুষের হৃদয়।

আজকের তারকাদের কাছেও তিনি বিস্ময়। কলকাতার ছবিতে কত নায়ক এলো গেল। কিন্তু উত্তম কুমার অদ্বিতীয়ই থেকে গেলেন।

বাংলা সিনেমার এ নায়কের জন্মদিন গেল গত ৩ সেপ্টেম্বর। দিনটিকে ঘিরে নস্টালজিক হয়েছেন তার সময়কালীন তারকারা।

সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছে উত্তম কুমারের এক অজানা ঘটনা।

টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশ, প্রাণের ভয়ে কলকাতা ছেড়ে একবার পালিয়েছিলেন উত্তম কুমার!

ঘটনাটি টালিউডে তার ক্যারিয়ার শুরুর প্রথম দিকে ষাটের দশকের শেষে। সিনেমায় এসেই ব্যবসাসফল ছবি উপহার দিতে পারেননি এই স্বপ্নের নায়ক। তাকে বলা হতো ফ্লপ মাস্টার।

টানা ৭টি ফ্লপ সিনেমা দেওয়ার পর হঠাৎ করেই তার সিনেমাগুলো সুপার-ডুপার হিট হতে থাকে।

সত্তর দশকের শুরুর ভাগে কলকাতায় শুরু হয় নকশাল আন্দোলন। একদিন নিউ থিয়েটারস স্টুডিওর মেকআপ রুমে বসে ছিলেন উত্তম কুমার। তখনই কয়েকজন ব্যক্তি অস্ত্রসহ হানা দেয় সেখানে। তার কপালে বন্দুক ঠেকিয়ে তারা প্রাণনাশের হুমকি দেয়। অবশ্য আর কথা না বাড়িয়ে চলে যায় বন্দুকধারীরা। আর এতেই ভয়ে নাকি তখনই প্রাণ যায় যায় উত্তম কুমারের।

ওইদিন উত্তম কুমার এতোটাই ভয় পেয়েছিলেন যে, কলকাতা ছেড়েই পালিয়ে যান। শুধু পালানইনি, তাকে যেন সহজে না চেনা যায় সেজন্য নিজের চুল ছোট করে ফেলেন। উঠে পড়েন মুম্বাইয়ের ট্রেনে।

মুম্বাইয়ে গিয়ে ওঠেন অভিনেতা অভি ভট্টাচার্যের বাড়িতে। অনেকটা আতত্মগোপনের মতো মাসখানেক ওই বাড়িতে থেকে অভিনেতা বিশ্বজিত্চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে যান উত্তম।

টালিউড যতই তার খোঁজ করুক উত্তম জানিয়ে দেন আর কলকাতায় ফিরবেন না তিনি।

উত্তম একদিন বিশ্বজিতকে বলেন, ‘চল, তুই আর আমি মিলে এখান থেকেই বাংলা সিনেমা বানাব। কলকাতা যাওয়ার কি দরকার!’

এভাবেই অনেকদিন পেরিয়ে যাওয়ার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। ভয়টাও কাটিয়ে ওঠেন উত্তম। বন্ধু-সহকর্মীদের আশ্বাসে ফিরে যান কলকাতায়।

১৯৮০ সালে উত্তম কুমার শুটিং করছিলেন ‘ওগো বধূ সুন্দরী’ সিনেমার। শুটিং চলাকালীন স্ট্রোক করেন। তাকে ভেলভিউ ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। কিন্তু ১৬ ঘণ্টা চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৪ জুলাই না ফেরার দেশে পাড়ি জমান উত্তম কুমার।

এমে/