লিবিয়ায় বাংলাদেশী দালালের ক্যাম্পে আটক অর্ধশতাধিক

লিবিয়ায় বাংলাদেশী দালালের ক্যাম্পে আটক অর্ধশতাধিক

অবৈধপথে ইউরোপে যাওয়ার রুট হিসেবে আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা লিবিয়া, তিউনিসিয়াসহ কয়েকটি দেশের সাগরপথ ব্যবহার করছে। এসব পথ ব্যবহার করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকে স্বপ্নের দেশ ইউরোপে পৌঁছতে পারলেও অধিকাংশের ভাগ্যে আবার জুটছে মৃত্যু অথবা ভয়াবহ নির্যাতন। এই অবস্থায় মাদারীপুরের রাজৈর শ্রীরামপুর লামা বাজার ইউনিয়ন হোসেনপুর এলাকার দালাল সাহিনের পাঠানো বাংলাদেশীদের মধ্যে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি এখনো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ লিবিয়ার একটি ভাড়া বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে।

এ দিকে লিবিয়া যাওয়ার পর থেকেই যুবক মুন্সী আবু তাহের নামে এক ব্যক্তি গত ১৯ জুলাই থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গতকাল লিবিয়ার ত্রিপোলি থেকে বাংলাদেশী নয়া দিগন্তকে টেলিফোনে জানান, দেশে থাকা দালাল সাহিনের সাথে মুন্সী আবু তাহেরের বোনের যোগাযোগ হয়েছে। কিন্তু ১৯ জুলাইয়ের পর থেকে তাহের লিবিয়ায় আসার পর থেকে জেলে আছে না কোথায় রয়েছে সেই খোঁজ অদ্যবধি দালাল সাহিনও বলতে পারছে না। তাহের নিখোঁজের পর থেকে তার মা পাগলের মতো হয়ে গেছেন। তাহের দুই মেয়ে এক ছেলে সন্তানের জনক বলে জানা গেছে। তিনি আরো বলেন, শুধু আবু তাহের নিখোঁজ তা কিন্তু নয়, দালাল সাহিনের পাঠানো প্রায় ৫০ জন বাংলাদেশী লোক এখনো লিবিয়ায় একটি বাড়িতে আটক আছে।

উল্লেখ্য, ইউরোপে যাওয়ার উদ্দেশে সাগর থেকে উদ্ধার হওয়া ওই বাংলাদেশী গতকাল শুক্রবার রাতে নয়া দিগন্তকে আরো বলেন, আমি এই মুহূর্তে লিবিয়াতে খুব বিপদের মধ্যে আছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে লিবিয়ার মানবপাচার সিন্ডিকেটের আরো বিস্তারিত জানাতে পারব।

উল্লেখ্য, প্রতি বছরের মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত সাগরপথে ইউরোপে লোক পাঠাতে আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রগুলো সক্রিয় হয়ে উঠে। কারণ এই সময়ে সাগর স্থির থাকে। এর আগে দালালরা বাংলাদেশ থেকে নানা কৌশলে অসহায় বাংলাদেশীদের প্রথমে বিমানপথে নিয়ে যায় দুবাই। সেখানে কয়েক দিন রাখার পর চার্টার্ড ফ্লাইটে নিয়ে যায় লিবিয়ার বেনগাজিতে। সেখান থেকে সড়কপথে দুই দিনের ভ্রমণ শেষে নেয়া হয় ত্রিপোলির শেষ সীমানায়।

সাগর ঘাটের আশপাশে রেখে গ্রিন সিগনাল পাওয়ার পরই চুক্তি মোতাবেক ইতালির উদ্দেশে কাঠের নৌকায় তাদের তুলে দেয়া হয়। অনেকে ইতালি পৌঁছতে পারে। আবার অনেকে সাগরে হারিয়ে যায়। এর মধ্যে অনেকে আবার কোস্ট গার্ডের যৌথ অভিযানে ইউরোপে পাড়ি দেয়ার আগেই ধরা পড়ে যায়। তাদের ঠাঁই হয় দেশটির ডিটেনশন ক্যাম্পে। সেখান থেকেই আবার দালাল চক্র টাকার বিনিময়ে তাদের মুক্ত করে আবারো ঠেলে দেয় একই পথে।

এমজে/