কেএনএফ’র পোশাক তৈরির মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা রিমান্ডে

কেএনএফ’র পোশাক তৈরির মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা রিমান্ডে

পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন কুকি–চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্দেহজনক পোশাক (ইউনিফর্ম) তৈরিতে কাপড় (ফেব্রিকস) সরবরাহের অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতার ভাইসহ আট আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তফা আজ বুধবার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

আট আসামি হলেন তারিকুল ইসলাম, তৌহিদুল ইসলাম, আতিকুর রহমান, জামালুল ইসলাম, কামরুজ্জামান, সাহেদুল ইসলাম, গোলাম আজম ও নিয়াজ মোরশেদ। আসামিদের মধ্যে তারিকুল ইসলাম আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য ও সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের ছোট ভাই ও তাঁদের পারিবারিক মালিকানাধীন ‘অয়েল কম্পোজিট নিট কেমিক্যাল ফেব্রিকস ডাইং’ কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

নগর–পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আট আসামিকে পাহাড়তলী থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ২৭ মে রাতে পাহাড়তলী থানার ডিটি রোডের একটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে ১৫ হাজার ইউনিফর্ম জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় বায়েজিদ বোস্তামী থানার এসআই আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে পাহাড়তলী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন। ২ জুন রাতে নগরের চান্দগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগ নেতার ভাইসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের বায়েজিদ বোস্তামী থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আসামিরা অয়েল কম্পোজিট নিট কেমিক্যাল ফেব্রিকস ডাইং মালিক কর্মকর্তা হয়ে কেএনএফ পোশাক তৈরির জন্য বায়েজিদের রিংভো অ্যাপারেলস নামের একটি পোশাক কারখানা ও পাহাড়তলী থানার ডিটি রোডের নুর ফ্যাশন অ্যান্ড গার্মেন্টস ফেব্রিকস সরবরাহ করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে।

এর আগে ২৬ মে রাতে নগরের অক্সিজেন নয়াহাট এলাকার একটি কারখানা থেকে ১১ হাজার ৭৮৫টি ইউনিফর্ম উদ্ধার করে পুলিশ। ১৭ মে রাতে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার নয়ারহাট এলাকার রিংভো অ্যাপারেলস থেকে ২০ হাজার ৩০০টি সন্দেহজনক পোশাক (ইউনিফর্ম) জব্দ করে গোয়েন্দা পুলিশ।

পরে এ ঘটনায় করা মামলার এজাহারে পুলিশ বলেছে, ইউনিফর্মগুলো পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ)। দুই কোটি টাকার চুক্তিতে ইউনিফর্মগুলো প্রস্তুতের ফরমাশ নেওয়া হয়। এ ঘটনায় পোশাক কারখানাটির মালিকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার তিনজন হলেন সাহেদুল ইসলাম, গোলাম আজম ও নিয়াজ হায়দার। পুলিশ জানিয়েছে, সাহেদুল ইসলাম কারখানার মালিক। অন্য দুজন পোশাকগুলো তৈরির ফরমাশ এনেছিলেন।

ফেসবুকে পেজ খুলে দুই-তিন বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। পাহাড়ের দুই ব্যাংকের তিন শাখায় ডাকাতিও করে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। বান্দরবানের দুই উপজেলায় ১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই ব্যাংকের তিন শাখায় ডাকাতির ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।