ধারদেনায় বেঁচে আছে ৫ ইসলামী ব্যাংক

ধারদেনায় বেঁচে আছে ৫ ইসলামী ব্যাংক

গ্রাহকের নিরবচ্ছিন্ন ব্যাংক লেনদেন নিশ্চিতে প্রতিটি ব্যাংকেরই থাকে একটি করে 'চলতি হিসাব'। এটিএমবুথ থেকে অর্থ উত্তোলন, কার্ডে লেনদেন, অনলাইনে অর্থ স্থানান্তর, অন্তঃব্যাংক চেক ক্লিয়ারিংসহ গ্রাহকের নিয়মিত যাবতীয় লেনদেন নিষ্পত্তি হয়ে থাকে এই চলতি হিসাবের মাধ্যমে। একে 'তরল হিসাব' কিংবা 'নগদ অর্থ' বলা হয়ে থাকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে প্রতিটি ব্যাংকেরই একটি করে চলতি হিসাব রয়েছে। লেনদেন সচল রাখতে এই হিসাবে টাকা না থাকার সুযোগ নেই। তবে গত কয়েকমাস ধরে চলতি হিসাবে বিপুল ঘাটতি নিয়ে চলছে ইসলামি ধারার পাঁচটি ব্যাংক।

এপ্রিল মাসে সবচেয়ে বেশি ১০ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি ফার্স সিকিউরিটিজ ইসলামি ব্যাংকের। আর ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশের ৬ হাজার ৪শ ৫৫ কোটি টাকা। এরপরই রয়েছে, সোশ্যাল ইসলামী, ইউনিয়ন ও গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক। এই পাঁচ ব্যাংকের চলতি হিসাবে মোট ঘাটতি ২৪ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা। যা জানুয়ারি মাসে এই ঘাটতি ছিলো ২৩ হাজার ৭১৭ কোটি টাকার।

অনেক চেষ্টা করেও এ বিষয়ে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি ব্যাংকগুলোর। ঘাটতি মেটাতে প্রতিনিয়ত উদার হস্তে ব্যাংকগুলোকে অর্থ সরবরাহ করে আসছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।

এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক সভাপতি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলছে, এই ব্যাংকগুলোর এমন অবস্থায় সংকটে পড়বে পুরো ব্যাংক খাত।

সংকট দীর্ঘ হওয়ায় বিধিবদ্ধ অর্থ সংরক্ষণ অর্থাৎ সিআরআর ও এসএলআর রাখতে পাড়ছে না এই ব্যাংকগুলো। এজন্য জরিমানার বিধান থাকলেও বড় ছাড় পাচ্ছে এই পাঁচ ব্যাংক। এবিবির সাবেক এই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এ জরিমানা মাফ করে না এবং করতে পারেও না।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিয়মকে পাস কাটিয়ে ব্যাংক পরিচালনা কারায় আর্থিকখাত দুর্বল হচ্ছে বলে মনে করেন সিপিডি'র নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেন, প্রভাবশালী মহল যখন রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় নিয়ম ভেঙ্গে ব্যাংক পরিচালনা করে তখন তাদের আর্থিকখাত দুর্বল হতে বাধ্য।

এদিকে একই শিল্প গ্রুপ দ্বারা পরিচালিত ব্যাংকগুলোর একের পর এক অনিয়ম সামনে এলেও যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবারই উদাসীন নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এমন সব অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে যে মুখে কুলুপ এঁটে থাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।