নামকাওয়াস্তে চালু হয়েছে চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের চিকিৎসাসেবা

নামকাওয়াস্তে চালু হয়েছে চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের চিকিৎসাসেবা

দেশের সবচেয়ে বড় চক্ষু হাসপাতাল জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে সীমিত পরিসরে চলছে চিকিৎসাসেবা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আশা করছে, ঈদের ছুটি শেষে রোগীদের ধীরে ধীরে স্বাভাবিক সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। তবে কবে নাগাদ হাসপাতালের সেবা পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না তাঁরা।

আজ রোববার দুপুরের পর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালটির জরুরি বিভাগ খোলা রয়েছে। সেখানে রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে হাসপাতালটির অন্যান্য সেবা বন্ধ রয়েছে।

সাধারণত ঈদের ছুটিতে জরুরি বিভাগ চালু থাকে। জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে হাসপাতালের কর্মীদের মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনায় ২৮ মে হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে যায়। এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর ৪ জুন জরুরি বিভাগের চিকিৎসাসেবা চালু হয়। ঈদের ছুটিতেও জরুরি বিভাগ সচল রয়েছে।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জানে আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন তো ছুটির ভেতরে ইমার্জেন্সি (জরুরি বিভাগের সেবা) চলবে; সব জায়গায় যেভাবে চলছে। আস্তে আস্তে (পুরোপুরি চালু) হবে, অন্যান্য হাসপাতাল যেভাবে চলে, ওইভাবে আমরা যাচ্ছি।’

কবে নাগাদ পুরোদমে সেবা দেওয়া চালু হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে জানে আলম বলেন, ‘কোন সময় সেভাবে বলা যায় না। তবে চলছে তো স্বাভাবিকভাবে যেভাবে চলে। এখন পর্যন্ত আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

চোখের আঘাত নিয়ে কুমিল্লা থেকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে এসেছেন কাজী জুয়েল। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে অপেক্ষারত এই রোগী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক ঘণ্টা ধরে বসে আছি। ডাক্তার অপারেশন থিয়েটারে আছেন। অপারেশন শেষ হলে আমাকে দেখবেন। আমি চোখে আঘাত পেয়েছি। কুমিল্লায় ডাক্তার দেখিয়েছিলাম, তাঁরা ঢাকায় আসতে বলেছেন।’

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট দেশের সবচেয়ে বড় এই চক্ষু হাসপাতালে অর্ধেক শয্যা নারী ও অর্ধেক পুরুষের জন্য বরাদ্দ। প্রতিদিন বহির্বিভাগে আড়াই থেকে তিন হাজার রোগী আসেন। এর মধ্যে ৪৫০ থেকে ৫০০ শিশু। প্রতিদিন গড়ে ১০০ অস্ত্রোপচার হয়। চোখে বিভিন্ন ধরনের আঘাত পেয়ে জরুরি চিকিৎসা নিতে আসেন গড়ে ২৫ থেকে ৩০ জন। এই হাসপাতালে রেটিনা, গ্লুকোমা, কর্নিয়ার বিশেষায়িত চিকিৎসা হয়। চোখের প্লাস্টিক সার্জারি হয়।

গত ২৫ মে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত চারজন বিষপান করলে তাঁদের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন একজন হারপিক পান করেন। এরপর ২৭ মে আহত ব্যক্তিদের একটি পক্ষ পরিচালকের অপসারণ দাবি করে তাঁকে অবরুদ্ধ করে। এ ঘটনার পর পরিচালক অধ্যাপক খায়ের আহমেদ চৌধুরী ছুটিতে চলে যান। পরদিন মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনায় হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে যায়।