গুলশানের ফ্ল্যাটে ঢুকে খাবার দেখেই ৩ দিন কাটিয়ে দিল চোর, অতঃপর…

গুলশানের ফ্ল্যাটে ঢুকে খাবার দেখেই ৩ দিন কাটিয়ে দিল চোর, অতঃপর…

নাম তার মাসুম, পেশা চুরি। সম্প্রতি চুরির জন্য গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে ঢোকেন। কিন্তু সেখানে ঢুকে কাটিয়ে দেন তিনদিন। চুরির কথা ভুলে আরও কয়েকদিন থাকার পরিকল্পনা করেন তিনি। মূলত সেখানে থাকা খাবার দেখেই সেখানে বেশ কয়েকদিন থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মাসুম।

জানা গেছে, ফ্ল্যাটটির মালিক নর্থ অ্যান্ড কফির ব্যবস্থাপনা পরিচালক যুক্তরাষ্ট্রের রিচার্ড হাবার্ড। দীর্ঘদিন ধরে ক্যাফে বন্ধ থাকায় তিনি যুক্তরাষ্টে যান। ফ্ল্যাটটি খালি থাকলেও এর ভেতরে ছিল সিসিটিভি ক্যামেরা।

‘গুলশানের ঘরটি নিরাপদে আছে কি না’ নিজের মোবাইল ফোন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ঘরে বসেই নিয়মিত সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতেন রিচার্ড। তবে শনিবারের ফুটেজে হঠাৎ দেখতে পেলেন কেউ তার ঘরে হাঁটাহাঁটি করছে। ফ্রিজ থেকে খাবার ও ওয়াইন নিয়ে টেবিলে রেখে এক যুবকের নাচের দৃশ্য দেখে অবাক তিনি। সঙ্গে সঙ্গে জানালেন তার বাংলাদেশের সহকর্মীকে।

সহকর্মী খবর দিলেন পুলিশে। শনিবার দিবাগত রাতে গুলশান এভিনিউয়ের ৮৯ নম্বর সড়কের ভবনে ঢোকে পুলিশ। সংযুক্ত ড্রয়িং ও ডাইনিং টেবিলে অবস্থান নেয় তারা। কাউকে দেখতে না পেলেও টেবিলের ওপর কিছু রান্না করা খাবারভর্তি কড়াই, জুসের প্যাকেট ও ওয়াইনের বোতল দেখতে পান তারা।

পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে লুকিয়েছিলেন ওই যুবক। কয়েক মিনিটের মধ্যেই একটি বেডরুমের টয়লেট থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে। তার নাম মাসুম। তিনি মাদকাসক্ত এবং পেশায় চোর।

গ্রেফতারের পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি করা হয় মাসুমকে। পুলিশ সূত্র জানায়, চুরির জন্য এসে বাড়িতে ঢুকে প্রচুর খাবার দেখে চুরির কথা ভুলে যান মাসুম। সেখানে তিনদিন থাকেন। ঘরের খাবারগুলো খেয়ে এই খালি ফ্ল্যাটে আরও কয়েকদিন থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি।

ঘটনার সত্যতা গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন মাসুমকে ধরার অভিযানে থাকা গুলশান থানার ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম।

তিনি জানিয়েছেন, ‘মাসুমের বিরুদ্ধে ঢাকার একাধিক থানায় মামলা রয়েছে। চুরির জন্য গ্রেফতার হয়েছিল একবার। আচার-আচরণ দেখে ধারণা করা হচ্ছে তার মানসিক সমস্যা থাকতে পারে। সে ফুটপাথে থাকে, ফ্ল্যাট খালি পেয়ে এখানে থেকে গিয়েছিল। সিসিটিভি ক্যামেরায় আমরা ফ্ল্যাটটিতে তার খাওয়ার দৃশ্য দেখতে পাই।

এদিকে, ফ্ল্যাটের মালিক যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এ ঘটনায় কোনও মামলা বা জিডি করতে রাজি হননি। তাই গত মার্চ মাসে গুলশান থানায় দায়ের করা একটি চুরির মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয় মাসুমকে।