বাংলাদেশের ছাত্র ও জনগণের নিরাপত্তা নিয়ে বৃটিশ পার্লামেন্টে শঙ্কা প্রকাশ

বাংলাদেশের ছাত্র ও জনগণের নিরাপত্তা নিয়ে বৃটিশ পার্লামেন্টে শঙ্কা প্রকাশ

বাংলাদেশের ছাত্র ও বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে বৃটিশ পার্লামেন্টে। পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সে সোমবার উত্থাপিত ‘আর্লি ডে মোশন’ এ বলা হয়, কোটাব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে অনেক ছাত্র নিহত বা আহত হওয়ার জন্য বিশেষভাবে আতঙ্কিত।

পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসের পপলার ও লাইম হাউস আসনের এমপি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আপসানা বেগম এই প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

‘বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ’ শিরোনামে উত্থাপন করা এই মোশনে এখন পর্যন্ত ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এমপিসহ মোট ২১ জন এমপি স্বাক্ষর করেছেন।

মোশনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে এই হাউস শঙ্কিত। কোটাব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে অনেক ছাত্র নিহত বা আহত হওয়ার জন্য বিশেষভাবে আতঙ্কিত। কোটা পদ্ধতির বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট রায় দিলেও বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশের ছাত্র ও বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা বিশ্বাস করি যে তাদের প্রতি সহিংসতা, বেআইনি হত্যা, ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া এবং অন্যান্য ধরনের দমনপীড়ন অগ্রহণযোগ্য এবং বাংলাদেশের মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বেসামরিক নাগরিকদের জন্য সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদি পরিণতি সম্পর্কে আমরা উদ্বিগ্ন। মোশনে প্রতিবাদ করার অধিকার, সমাবেশ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যেকোনো কার্যকরী গণতন্ত্রের জন্য অবিচ্ছেদ্য এবং মৌলিক অধিকার বলে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে বাংলাদেশে সহিংসতা নিয়ে বৃটেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ১৮ ও ২২ জুলাই দুই দফায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার বৃটেনের ফরেন, কমনওয়েলথ ও ডেভেলপমেন্ট অফিসের পার্লামেন্টারি আন্ডার সেক্রেটারি ক্যাথেরিন ওয়েস্ট বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে যে সহিংসতা আমরা দেখেছি, তা নিয়ে বৃটেন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। যেখানে শতাধিক মানুষ নিহত ও সহস্রাধিক মানুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মানুষের প্রাণহানি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদকারীদের সহিংসতার শিকার হওয়া উচিত নয়।’

প্রতিবাদ করার, শান্তিপূর্ণভাবে একত্র হওয়ার ও ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রকাশ করতে পারার অধিকার বৃটেনের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, এসব অধিকার অবশ্যই রক্ষা করতে হবে। ইন্টারনেট ও যোগাযোগ পরিষেবা যত দ্রুত সম্ভব ফিরিয়ে আনতে হবে, যাতে করে বাংলাদেশের মানুষ বৃটেন ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা তাদের বন্ধু ও পরিবারবর্গের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।

সহিংসতা ও প্রাণহানির অবসান এবং সারা বাংলাদেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার উপায় খুঁজে বের করার জন্য সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে বৃটেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বিবৃতিতে।