শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে মরিচবাঁটা, বই-চেয়ার ছোড়াছুড়ি!

শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে মরিচবাঁটা, বই-চেয়ার ছোড়াছুড়ি!

ঢাকা, ১৭ নভেম্বর (জাস্ট নিউজ) : টানা দ্বিতীয় দিনের মতো চরম বিশৃঙ্খলা ও উত্তেজনা দেখা গেছে শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে। বিতর্কিত প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ রাজাপাকসের সমর্থক আইনপ্রণেতারা তার বিরুদ্ধে আনীত দ্বিতীয় অনাস্থা প্রস্তাব রুখতে প্রতিপক্ষ সদস্যদের দিকে বই, ফার্নিচার ও মরিচবাঁটা ছুড়ে মেরেছেন! প্রথম দিন দুই পক্ষের মধ্যে মারামারিও বাধে। এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।

শুক্রবার এই অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় যখন রাজাপাকসেপন্থি সদস্যরা পার্লামেন্টের ফ্লোরে এসে জড়ো হন। আর স্পিকার কারু জয়সুরিয়াকে বসতে বাধা দেন। তবে এক ঘন্টারও কিছু সময় পর জয়সুরিয়া কয়েক ডজন নিরস্ত্র কর্মকর্তা ও কর্মচারির সহায়তায় অবশেষে চেম্বারে প্রবেশ করতে সক্ষম হন। তখন ওই সদস্যরা স্পিকারের চেয়ার নিয়ে যান। কিন্তু কর্মচারিরা স্পিকারের জন্য সাধারণ চেয়ার নিয়ে আসেন।

দাঙ্গাকারী আইনপ্রণেতারা ওই চেয়ারটিও নিয়ে যান। সেটি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে প্রতিপক্ষ আইনপ্রণেতা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের দিকে ছুড়ে মারেন।

এক পর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তারা স্পিকারের চারপাশে বোর্ড দিয়ে তাকে রক্ষার চেষ্টা করেন। কারণ রাজাপাকসের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে কণ্ঠভোট শুরুর সময় তার দিকে বিভিন্ন জিনিস ছুড়ে মারছিলেন অন্য সদস্যরা। কিন্তু এই প্রতিকূলতার মধ্যেও স্পিকার জয়সুরিয়া ভোটাভুটি পরিচালনা করেন। ভোটে অনাস্থা প্রস্তাব পাস হয়। এরপর সোমবারের জন্য অধিবেশন মুলতবি করেন তিনি।

শুক্রবার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিাপালা সিরিসেনাকে লেখা চিঠিতে স্পিকার জানিয়েছেন, ২২৫ সদস্য বিশিষ্ট পার্লামেন্টের ১২২ জনই রাজাপাকসের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট সিরিসেনাই মূলত প্রধানমন্ত্রী রণিল বিক্রমাসিংহেকে বরখাস্ত করে রাজাপাকসেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেন। কিন্তু ওই সিদ্ধান্ত সংবিধানসম্মত নয় বলে অনেকেই নিন্দা জানান। বিক্রমাসিংহের সমর্থক আইনপ্রণেতারাই পার্লামেন্টে জোর করে রাজাপাকসের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাস করান।

রাজাপাকসে প্রথম দফার অনাস্থা প্রস্তাব অস্বীকার করে পদত্যাগে অস্বীকৃতি জানান। তিনি তখন বলেন কণ্ঠভোট ছাড়া এই ভোটের কোনো মূল্য নেই। কিন্তু কণ্ঠভোটে অনাস্থা প্রস্তাব পাস হলেও এই ভোটাভুটিকে ‘যথাযথ নয়’ বলে উড়িয়ে দেন রাজাপাকসে।

এর আগে গত সপ্তাহে অচলাবস্থা নিরসনে পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দিয়ে নির্বাচনের আদেশ দেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এই পদক্ষেপকে অসাংবিধানিক দাবি করে দায়েরকৃত একটি পিটিশনের নিষ্পত্তির আগ পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের ওই আদেশ স্থগিত করেছে।

(জাস্ট নিউজ/এমজে/১০২০ঘ.)