মিয়ানমারের প্রশংসা করে তোপে টুইটার প্রতিষ্ঠাতা

মিয়ানমারের প্রশংসা করে তোপে টুইটার প্রতিষ্ঠাতা

ঢাকা, ১১ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ): টুইটারের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যাক ডোরসে আবারো সমালোচনার মুখে পড়লেন। এবার রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিপীড়নকারী দেশ মিয়ানমারের প্রশংসা করায় কড়া সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। টুইট বার্তায় জ্যাক ডোরসে মিয়ানমার ভ্রমণের প্রশংসা করেন। এর আগে নভেম্বরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন।

সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, ডোরসে লিখেছেন, জন্মদিন উপলক্ষে তিনি ১০ দিনের জন্য গত মাসে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে গিয়েছিলেন। সেখানকার অভিজ্ঞতা তার জন্য অত্যন্ত ও আনন্দদায়ক সুখকর ছিল। তিনি তার অনুসরণকারীদের মিয়ানমারে বেড়াতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার অত্যন্ত সুন্দর দেশ।’ সেখানকার মানুষ খুবই উচ্ছল। সেখানকার খাবার অসাধারণ।’ আর রোহিঙ্গাদের উপেক্ষা করে অন্য সবকিছু নিয়ে কথা বলায় সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।

কারণ মিয়ানমারে হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনের পর বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গারা। গত বছরের আগস্টের পর পালিয়ে আসতে শুরু করে রোহিঙ্গারা। এখন পর্যন্ত প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। সারা বিশ্ব এ জন্য মিয়ানমারের সমালোচনায় মুখর হয়। অনেক সংস্থাই মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের শিকারকে গণহত্যা বলে মন্তব্য করেছে।

এ মাসের শুরুতে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে পাবলিক ইন্টারন্যাশনাল ল অ্যান্ড পলিসি গ্রুপ নামের একটি থিংকট্যাংক বলেছে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে রোহিঙ্গাদের যে নির্যাতনের শিকার হতে হয়, তা গণহত্যা ভিন্ন অন্য কিছু নয়। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের অনুরোধে এই সংস্থা এ বছর মার্চ ও এপ্রিলে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের মধ্যে মাসব্যাপী যে তদন্ত পরিচালনা করে, এক সংবাদ সম্মেলনে তার সারসংক্ষেপ বর্ণনা করা হয়। এই সংস্থার সভাপতি পল উইলিয়ামস বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যা ঘটেছে, তা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।

এ বছর সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এই সংস্থার প্রস্তুত তদন্তের ভিত্তিতে এক প্রাথমিক প্রতিবেদনে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর সীমাহীন নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিবরণ দেয়। তাতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত জাতিগত হত্যার প্রমাণ লিপিবদ্ধ করা হলেও গণহত্যার প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যাওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স গত মাসে এক বিবৃতিতে রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনাকে ‘ট্র্যাজেডি’ হিসেবে বর্ণনা করেন, কিন্তু তাকে ‘গণহত্যা’ বলতে অসম্মত হন। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এমন স্বীকৃতির ফলে আন্তর্জাতিক আইনের চোখে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বেশ কিছু আইনগত দায়দায়িত্ব এসে পড়ে, যার জন্য তারা এখনো প্রস্তুত নয়।

যেসব তদন্তকারী স্টেট ডিপার্টমেন্টের রোহিঙ্গাবিষয়ক প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেন, তারাও বলছেন, রোহিঙ্গা নির্যাতন গণহত্যা, সে কথা স্বীকার করে নেওয়া উচিত।

থিংকট্যাংক জানায়, সেনাবাহিনীর সদস্যদের হাতে রোহিঙ্গা নারীরা পুরো গ্রামবাসীর সামনে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রে বৌদ্ধ ভিক্ষুরাও এসব ধর্ষণে অংশ নেন।

(জাস্ট নিউজ/এমআই/০৯৪১ঘ)