ধাক্কাধাক্কি-হুড়োহুড়িতে ২০ মিনিটের আগেই বক্তব্য শেষ মোদির

ধাক্কাধাক্কি-হুড়োহুড়িতে ২০ মিনিটের আগেই বক্তব্য শেষ মোদির

ভাষণের সুর তখন সবে চড়ায় তুলেছেন তিনি। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধছেন। তখনই নজরে আসে, সামনের ভিড়ে ভরা মাঠ কেমন যেন বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ছে। সবাই শান্ত করার চেষ্টা করলেন। খুব একটা কাজ হলো না। বিশৃঙ্খলতা বাড়তেই থাকলো। শেষমেষ উপায় না দেখে মাত্র ১৮ মিনিটের মাথায় তাড়াহুড়ো করে ভাষণ শেষ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

ভারতের শীর্ষস্থানীয় একাধিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরের একটি মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ধাক্কাধাক্কি ও হুড়োহড়িতে আহত হন বেশ কয়েকজন। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নারী ও শিশু রয়েছে।

জানা গেছে, মোদির সভার আয়োজন করেছিল অখিল ভারতীয় মতুয়া মহাসঙ্ঘ। আজ এ সভা একেবারে কানায় কানায় ভরে উঠেছিল। সেখানে কার্যত তিলধারণের জায়গা ছিল না। মোদি ভাষণ শুরু করার পরেও মাঠে লোক আসতে থাকে। ফলে ভিড়ের ওপর চাপ বাড়তেই থাকে।

একটা সময় দেখা যায়, মঞ্চের বাঁ দিকে ভিড়ের চাপে মাঠের ভিতরে চোঙা লাগানো খুঁটি উপড়ে হেলে পড়েছে জনতার গায়ে। মোদিকে বার বার বলতে শোনা যায়, ‘আপনারা এ রকম করবেন না।’ এ সময় ধাক্কাধাক্কি ও হুড়াহুড়িতে আহত হওয়ার ওই ঘটনা ঘটে।

এসব দেখে মঞ্চ থেকে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী। ভাষণ থামিয়ে বেসামাল জনতাকে শান্ত হওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। সঙ্গে মমতাকে খোঁচা দিতে মোদি বলেন, ‘এই ভিড় দেখে বুঝতে পারছি, দিদি কেন হিংসার রাস্তা নিচ্ছেন।’ কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হলো না। এর পর কার্যত বাধ্য হয়েই একেবারে তাড়াহুড়ো করে ভাষণ শেষ করেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে গত বছরের ১৬ জুলাই মেদিনীপুর শহরে ‘কৃষক কল্যাণ সমাবেশে’ ভাষণ দিতে এসেছিলেন মোদি। বর্ষার দিনে জনতার মাথা আড়়াল দেওয়ার জন্য পুরো মাঠ সেদিন মুড়়ে ফেলা হয়েছিল সামিয়ানা খাটিয়ে। লোহার কাঠামোর উপরে প্লাস্টিকের চাদর ছিল।

কিন্তু আচমকাই বিশৃঙ্খল ভিড়ের কারণে সেই ছাউনিরই একাংশ ভেঙে পড়়ে। ওই লোহার কাঠামোর আঘাতে এবং হুড়়োহুড়়ির চোটে আহত হন ২৪ জন নারীসহ ৯০ জন। সেদিন আতঙ্কিত মানুষ যখন প্রাণের ভয়ে কাদা মাঠে দৌঁড়়াচ্ছেন, মাত্র এক মিনিট বিরতি নিয়ে আগাগোড়়া বক্তৃতা চালিয়ে গিয়েছিলেন মোদি। এদিন সেই পথে হাঁটেননি আর তিনি। পরিস্থিতি বেসামাল দেখে ভাষণই থামিয়ে দেন মোদি।

এমআই