ট্রাম্পের রুশ সংযোগ নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলেন মুলার

ট্রাম্পের রুশ সংযোগ নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলেন মুলার

২০১৬ সালের যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের রুশ সংযোগ নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন এ ঘটনা তদন্তে নিযুক্ত বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট মুলার।

শনিবার এ প্রতিবেদন জমা দেন তিনি। এখন ওই প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তৈরি করবেন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার। প্রতিবেদনের ঠিক কতটা অংশ কংগ্রেসকে জানানো হবে, সে ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মুলারের রিপোর্টে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নতুন করে আর কোনও অভিযোগ তোলার সুপারিশ করা হয়নি। তবে ইতোপূর্বে ট্রাম্পের সাবেক ছয় সহযোগী এবং কয়েক ডজন রুশ নাগরিককে অভিযুক্ত করেছিলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের নেতাদের পাঠানো এক চিঠিতে অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার বলেছেন, এ সপ্তাহের শেষদিকে রবার্ট মুলারের দেওয়া প্রতিবেদনের মূল বিষয়গুলো তাদের জানাতে পারবেন তিনি।

ট্রাম্পের রুশ সংযোগ তদন্তের বিশেষ কৌঁসুলি নিযুক্ত হওয়ার ২২ মাসের মাথায় এ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলেন রবার্ট মুলার। তবে শুরু থেকেই ট্রাম্প শিবিরের পক্ষ থেকে এ তদন্তের সমালোচনা করা হচ্ছিল। তবে সম্প্রতি ট্রাম্প দাবি করেন, মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ এবং তাতে ট্রাম্প শিবিরের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে পরিচালিত তদন্তের তথ্য প্রকাশে তার কোনও আপত্তি নেই।

তথ্য প্রকাশে আপত্তি না থাকার দাবি করলেও মুলারকে অনির্বাচিত একজন ব্যক্তি আখ্যা দিয়ে তদন্তের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে দফায় দফায় প্রশ্ন তুলেছেন ট্রাম্প।

২০১৬ সালের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনে রুশ সংযোগের বিষয়টি অনেকদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রে। নির্বাচনকে প্রভাবিত করে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জেতাতে মস্কো প্রপাগান্ডা ছড়িয়েছিল এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সাবেক এফবিআই পরিচালক জেমস কোমিকে বরখাস্তের পর এই তদন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্টের দিকে মোড় নেয়। তবে ট্রাম্পের পাশাপাশি রাশিয়াও বরাবরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

এ মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে তদন্তকারী রবার্ট মুলারের প্রতিবেদন নিয়ে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ৪২০ জন আইনপ্রণেতা কংগ্রেস ও জনগণের কাছে তদন্ত প্রতিবেদনটি উন্মুক্ত করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ওই প্রস্তাবের বিপক্ষে কোনও ভোট পড়েনি।

প্রতিবেদন উন্মুক্ত করার প্রশ্নে আনা প্রস্তাবটি এখন পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে উত্থাপিত হবে। সেখানে কী ফল আসবে তা নিশ্চিত না এই ভোটের ফলাফল অনুযায়ী সিদ্ধান্ত কার্যকর করার বাধ্যবাধকতা নেই। তবে তদন্ত প্রতিবেদন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এটা বাইরে আসতে দিন। মানুষকে দেখতে দিন। প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে দেওয়া হবে কি না সেটা নির্ভর করছে আইনমন্ত্রীর ওপর।…আমরা দেখব কী ঘটে। আমরা দেখব এটা ন্যায়সঙ্গত কি না।’

অতীতের ধারাবাহিকতায় ট্রাম্প মুলারের তদন্তকর্মের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের দেশের ইতিহাসে আমার জয় ছিল সবচেয়ে বড় নির্বাচনি সাফল্যগুলোর একটি। অসামান্য সাফল্য। কোটি কোটি ভোটার সমর্থন দিয়েছেন। কিন্তু এখন এমন একজন ব্যক্তি একটি প্রতিবেদন লিখে দিতে যাচ্ছেন যিনি কোনও দিন একটি ভোটও পাননি।’

এমজে/