রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসিয়ানের প্রতিবেদন ফাঁস!

৭ লাখ রোহিঙ্গাকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা মিয়ানমারের

৭ লাখ রোহিঙ্গাকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা মিয়ানমারের

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের এক প্রতিবেদনে প্রত্যাশা করা হয় যে ৫ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী শীঘ্রই মিয়ানমারে ফিরে আসবে।

অথচ রাখাইন রাজ্যে চলমান গৃহযুদ্ধ, সেখানে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর অত্যাচার; এমনকী, অত্যাচারিত মুসলিম সংখ্যালঘুদের নামও উল্লেখ করা হয়নি প্রতিবেদনটিতে।

প্রতিবেদনটি দেখার পর বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, এটি তৈরি করেছে আসিয়ানের ‘ইমার্জেন্সি রেসপনস অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট টিম’ যা আগামী যেকোনো দিন প্রকাশিত হতে পারে।

এর মাধ্যমে বাংলাদেশে নতুন করে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুকে ফাঁদে ফেলতে মিয়ানমারের প্রচেষ্টা সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায় বলে এএফপির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এসব শরণার্থীদের সঙ্গে রয়েছেন ১৯৮২ সাল থেকে নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচার জন্যে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া আরো প্রায় ৩ লাখ রোহিঙ্গা।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বিদ্রোহ নির্মূল করার জন্যে ২০১৭ সালে দেশটির সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালায়। নিজেদের বাসভূমি রাখাইন রাজ্য তথা মিয়ানমার ছাড়তে তাদেরকে বাধ্য হন।

রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাদের গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ দেখে জাতিসংঘের তদন্তকারীরা সে দেশের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের ‘গণহত্যা’-র অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়েছেন।

গত ২০১৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে চুক্তি সই করে। কিন্তু, বাস্তবে দেখা যায় নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকারের অভাবে এখন পর্যন্ত কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থী মিয়ানমারে নিজেদের বাসস্থানে ফিরে যাননি।

এএফপির মতে, ‘প্রিলিমিনারি নিডস অ্যাসেসমেন্ট ফর রিপেট্রিয়েশন ইন রাখাইন স্টেট, মিয়ানমার’ ৫ লাখ রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসন নিয়ে কাজ করছে। মিয়ানমার সরকারের কাছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংখ্যা ৫ লাখ যা বাংলাদেশ এবং জাতিসংঘের হিসাবের চেয়ে অনেক কম।

আসিয়ানের প্রতিবেদনে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি। এর পরিবর্তে সেখানে ‘মুসলমান’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। এতে দাবি করা হয়, ম্যানুয়ালি কাজ করার পরিবর্তে অটোমেটিকভাবে কাজ করা হলে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শেষ করতে ‘দুই বছরের মতো’ সময় লাগবে।

শরণার্থী প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের গাফেলতির কথা উল্লেখ করে সেই প্রতিবেদনে শরণার্থীদের ‘সহজ ও সুশৃঙ্খলভাবে’ প্রত্যাবাসনের কাজে মিয়ানমারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করা হয়।

এ বিষয়ে মিয়ানমারের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ বলেছে এখনো কোনো রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করেননি।