পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসকদের গণপদত্যাগ, চিকিৎসা সেবা ব্যাহত

পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসকদের গণপদত্যাগ, চিকিৎসা সেবা ব্যাহত

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সরকারি হাসপাতালগুলোতে গণপদত্যাগ করছেন চিকিৎসকরা। আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত চারজন অধ্যক্ষ এবং ১৭০ জন চিকিৎসক পদত্যাগ করেছেন।

পত্রিকাটি বলছে, নজিরবিহীন এই পরিস্থিতিতে গোটা রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাটাই ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গোটা পরিস্থিতির জন্য রাজ্য প্রশাসন এবং মুখ্যমন্ত্রীকেই দায়ী করছে চিকিৎসক মহল। সরাসরি না বললেও ইস্তফার কারণ হিসেবে প্রশাসনিক অসহযোগিতাকেই কারণ হিসাবে দেখিয়েছেন চিকিৎসকরা।

বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়ে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের ‘হুঁশিয়ারি’ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছিলেন, চার ঘণ্টার মধ্যে কাজে যোগ না দিলে কড়া ব্যবস্থা নেয়া হবে। আন্দোলনকারীদের হোস্টেল ছাড়তে হবে বলেও হুমকি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতাল ছাড়ার পর কার্যত জোর করে জরুরি পরিষেবা চালুর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর হুমকি এবং প্রশাসনিক এই ব্যবস্থার জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে আরো কঠোর অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। এ বার সেই এসএসকেএম হাসপাতালেও গণপদত্যাগ করছেন চিকিৎসকেরা। ইতিমধ্যেই মেডিসিন বিভাগের আটজন পদত্যাগ করেছেন।

শুরু হয়েছিল সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল দিয়ে। তার পর থেকেই রাজ্য জুড়ে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের গণপদত্যাগ চলছে। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ (এনআরএস) তো বটেই, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ, এসএসকেএম, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের মতো একাধিক হাসপাতালে গণপদত্যাগ করছেন চিকিৎসকেরা।

এই পরিস্থিতির মধ্যে গোটা রাজ্যেই চিকিৎসা পরিষেবা এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন। মুমূর্ষ রোগী নিয়ে গেলেও ভর্তি করা হয়নি। মেলেনি প্রাথমিক চিকিৎসার মতো পরিষেবাও-এমন অভিযোগ রাজ্যের প্রায় সর্বত্র।

আর জি কর, মেডিক্যাল কলেজে দেখা গেছে হাসপাতালে এসেও রোগীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের লোকজন। রোগী নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ঘুরে বেড়ানোর ছবি রাজ্যের সর্বত্র। ফলে সব মিলিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাই কার্যত খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে। অবিলম্বে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে গোটা ব্যবস্থাই ভেঙে পড়বে বলে মনে করছেন চিকিৎসক মহলের একটা বড় অংশ।

এমআই