পশ্চিমবঙ্গের প্রস্তাবিত বাংলা নাম খারিজ মোদী সরকারের

পশ্চিমবঙ্গের প্রস্তাবিত বাংলা নাম খারিজ মোদী সরকারের

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রস্তাবিত বাংলা নাম খারিজ করল মোদী সরকার। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয় সাফ জানিয়ে দিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের নাম বদল করা কোনওভাবেই সম্ভব নয়। রাজ্যের নাম পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন সংবিধান সংশোধন।

পশ্চিমবঙ্গে বাম আমলেই শুরু হয়েছিল রাজ্যের নাম বদলের উদ্যোগ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা বেশি দূর গড়ায়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ক্ষমতায় আসার পর চেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলাতে। কিন্তু যে কোনও কারণেই বিষয়টা ধামাচাপাই ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসের গোড়াতেই হঠাত্ নাম পরিবর্তনের প্রক্রিয়াটি এগিয়ে নিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা। ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে রাজ্য মন্ত্রিসভায় পশ্চিমবঙ্গ নাম বদলে ফেলার প্রস্তাব পাস করিয়ে নেন তিনি ।

রাজ্য সরকারের বক্তব্য ছিল, প্রধানমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে বরাবরই পশ্চিমবঙ্গের ডাক পড়ে একদম শেষে। কারণ ইংরেজি বর্ণমালা অনুযায়ী রাজ্যগুলোর নাম ধরে ধরে বলার সুযোগ দেয়া হয়। এ রাজ্যের ইংরেজি নাম ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল’ শুরু ডব্লিই অক্ষর দিয়ে। ফলে ডাক আসে একদম শেষে। একে দীর্ঘ অপেক্ষা, তার উপর প্রথম দিকের বক্তারা বেশি সময় নিয়ে ফেলায় শেষের বক্তাদের নির্ধারিত সময় কমে যায়। তা ছাড়া শেষ দিকে অনেকটা শিথিলও হয়ে আসে সভার মনোভাব। সেই কারণেই রাজ্যের নাম বাংলা করার প্রস্তাব দেয়া হয় কেন্দ্রকে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রসচিব রাজনাথ সিংকে ফোনে জানান, এটা রাজ্যের আবেগের ব্যাপার। দ্রুত বিষয়টি দেখুন। রাজনাথও বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছিলেন বলে তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়।

এদিকে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ চেয়েছিলেন রাজ্যের নাম পশ্চিমবঙ্গই থাকুক। বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয় জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলের কোনও প্রশ্নই উঠছে না।

কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত শোনার পর সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি খুব হতাশ হলাম। জন্মে থেকে আমাদের রাজ্যকে বাংলা বলেই জানি। পরে পশ্চিমবঙ্গ করা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকার কেন খারিজ করল সেটা জানি না। তবে কাজটা ঠিক হল না।’

নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ি বলেন, ‘এটা বাংলার প্রতি বঞ্চনা। আসলে ওদের ইতিহাসের বোধ নেই।’

শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের বক্তব্য, ‘আমি বাংলা নামের পক্ষে ছিলাম না। কারণ বাংলা বললে বাংলাদেশের কথা বোঝায়। বঙ্গ নাম হোক চেয়েছিলাম। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে হতাশার কিছু নেই। অক্ষরের জন্য যদি নাম বদলের ব্যাপার থাকত তাহলে তামিলনাড়ুও তো শেষে বলার সুযোগ পেয়ে দুঃখ পেতে পারত।’

এমজে/