মোদির সম্মতি ভারতের অস্বীকার

কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতা করতে চান ট্রাম্প

কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতা করতে চান ট্রাম্প

কাশ্মীর ইস্যু যেনো আবারো নতুন করে উত্তাপ ছড়ালো। সেটা শুরু হয়েছে ওয়াশিংটন সফররত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠকের পর।

ইমরান খানকে ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি কাশ্মীর সমস্যার সংকট সমাধানে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে আগ্রহী। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও তাকে এ প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। এই মন্তব্যের পরপরই হইচই শুরু হয়েছে ভারতে। দেশটি কখনই কাশ্মীর ইস্যুতে তৃতীয় কোনো পক্ষের উপস্থিতি মেনে নেয় না।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মোদি কাশ্মীর ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কোনোরকম সহায়তা প্রত্যাশা করেননি।

সোমবার হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বৈঠক করেন।

বৈঠকে আফগানিস্তান ইস্যুতেও ইমরান খানের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, আফগানিস্তান ছাড়তে পাকিস্তানের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র কোনোভাবেই এই অঞ্চলে পুলিশগিরি করতে চায় না।

প্রথমে ইমরান খান ট্রাম্পকে বলেন, তিনি যদি কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতা করেন, তবে ইমরান স্বাগত জানাবেন। জবাবে ট্রাম্প বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও তাকে একই প্রস্তাব দিলে তিনি জানিয়েছিলেন, আনন্দের সঙ্গে এই ভূমিকা পালন করবেন।

ট্রাম্প বলেন, ‘যদি সম্ভব হয়, তবে আমি অবশ্যই মধ্যস্থতাকারী হবো।’ এই সমস্যা দ্বিপাক্ষীকভাবেই সমাধান হওয়া উচিৎ। যুক্তরাষ্ট্র এই নীতি বহুদিন ধরেই লালন করে আসছে।

ট্রাম্পের এই বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিতে বড় ধরণের পরিবর্তনের আভাস মিললো।

ইমরান খান ট্রাম্পকে বলেছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র এই ভূমিকা নেয়, তবে কোটি কোটি মানুষের প্রার্থনা তাদের সঙ্গে থাকবে। ভারতও সবসময় বলে আসছে কাশ্মীর ইস্যু একটি দ্বিপাক্ষিক বিষয় এবং এর মধ্যে অন্য কোনো পক্ষের নাক গলানোর সুযোগ নেই।

ট্রাম্পের সঙ্গে ইমরানের স্বাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়া, আইএসআই প্রধান লে. জেনারেল ফাইজ হামিদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মোহাম্মদ কোরাইশিসহ উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা।

আফগানিস্তানে পাকিস্তানের ভূমিকার উদাত্ত প্রশংসা করেন ট্রাম্প।

তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানে পাকিস্তান আমাদের অনেক সহায়তা করছে।’

পাকিস্তান সম্পর্কে নিজের মনোভাব ব্যক্ত করতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমার মনে হয়না পাকিস্তান অতীতে আমাদের প্রেসিডেন্টদের যথাযথ সম্মান করেছে। তবে আমি মনে করি পাকিস্তান আফগানিস্তানে আমাদের অসাধারণ শ্রদ্ধা দেখাতে পারতো। তারা এটা করেনি। শুধু তারা দোষারোপের খেলাই খেলেছে। কারণ তাদের মোকাবেলা হয়েছে ভুল প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে। আমি মনে করি তারা অতীতে আমাদের অনেক সাহায্য করতে পারতো। তাদের এখন নতুন নেতা, সে পাকিস্তানের মহানতম নেতা হতে যাচ্ছে। আমাদের দেশেও নতুন নেতা।

ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানে যথেষ্ট বাণিজ্য সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছে। এ কারণে সেখানে বিনিয়োগের ইচ্ছা পোষণ করেন। তিনি পাকিস্তানে ১০ থেকে ২০ গুণ বিনিয়োগ বাড়ানোর কথাও বলেছেন।

পাকিস্তানকে অসাধারণ দেশ উল্লেখ করে ট্রাম্প জানান, ইমরান খান তাকে সফরের আমন্ত্রণ জানাননি। কিন্তু তবুও তিনি সে দেশে সফরের আশা পোষণ করেন।

জিএস/