হিন্দি চাপিয়ে দিলে ভারতজুড়ে ‘ভাষা যুদ্ধের’ হুমকি

হিন্দি চাপিয়ে দিলে ভারতজুড়ে ‘ভাষা যুদ্ধের’ হুমকি

ভারতে হিন্দি ভাষা নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ক্ষমতাসীন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ও দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ হিন্দি ভাষা নিয়ে এক মন্তব্যের পর এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

শনিবার ভারতে হিন্দি ভাষা দিবস পালিত হচ্ছে। প্রতিবছর এই দিনে দিবসটি পালন করা হয়। এবার হিন্দি ভাষা দিবস উপলক্ষে এক বার্তায় অমিত শাহ বলেন, একটি ভাষাই বিশ্বজুড়ে ভারতের পরিচয় নির্ধারণ করে দিয়েছে। হিন্দি হচ্ছে ব্যাপক ব্যবহৃত ও সহজবোধ্য ভাষা। কেবল এই একটি ভাষাই দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছে।

অমিত শাহের ওই বক্তব্যের কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছেন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের নেতারা। এমনকি খোদ বিজেপির নেতারাও প্রতিবাদে শামিল হয়েছে। তারা বলছেন, হিন্দি চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হলে ভাষা যুদ্ধ হতে পারে।

তামিলনাড়ুর দ্রাবিড় মুনাত্রা কাজাঘাম (ডিএমকে) দলের নেতা এমকে স্টালিন বলেছেন, তিনি (অমিত শাহ) ভারতীয় অখণ্ডতাকে হুমকিতে ফেলে দিয়েছেন। যেটা বেদনাদায়ক ও নিন্দনীয়। খবর এনডিটিভির।

হিন্দির প্রাধান্যের কারণে অধিকার হারাতে বসা রাজ্যগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে তিনি দ্বিধা করবেন না। এটা ইন্ডিয়া, হিন্দিয়া না।

টুইটারে দেয়া এক বার্তায় এমকে স্টালিন বলেন, হিন্দিকে চাপিয়ে দেয়ার বিরুদ্ধে আমরা অব্যাহত প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। অমিত শাহের আজকের মন্তব্য আমাদের একটা বড় ধাক্কা দিয়েছে। এতে দেশের ঐক্যে নষ্ট হবে। কাজেই তার দেয়া বিবৃতি ফিরিয়ে নিতে তাকে অনুরোধ করছি।

এদিকে তামিলনাড়ুর দুই প্রধান রাজনৈতিক দল এআইএডিএমকে ও ডিএমকে এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলছে, দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশে হিন্দিকে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে।

কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামী বলেন, কোনো অজুহাতেই কারও ওপর কোনো ভাষা চাপিয়ে দেয়া উচিত হবে না। হিন্দিভাষী রাজ্যগুলোতে আগামী পহেলা নভেম্বর কন্নড় ভাষা দিবস পালন করা হবে কিনা।

কেরালার কংগ্রেস এমপি শশী থারুর বলেন, দক্ষিণে আমাদের অধিকাংশই হিন্দিকে দ্বিতীয় ভাষা ভাষা হিসেবে শিখি। কিন্তু উত্তরের কেউ-ই মালয়ালাম কিংবা তামিল শেখে না।

এএমএমকে নেতা টিটিভি দ্বিনাকরণ বলেন, অহিন্দি ভাষীদের ওপর হিন্দি চাপিয়ে দিলে বহুত্ববাদ ধ্বংস হয়ে যাবে। এতে যারা হিন্দি ভাষায় কথা বলেন না, তারা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হয়ে যাবেন।