ভারতের কাশ্মীর দমন, আসাম এনআরসি ইস্যুতে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র

ভারতের কাশ্মীর দমন, আসাম এনআরসি ইস্যুতে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র

কাশ্মীরে ভারত সরকারের চলমান দমন নীতি আর আসামের জাতীয় নাগরিক পঞ্জী (এনআরসি) ইস্যুতে আবারো গভীর উদ্বেগ এবং অসন্তোষ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত সহকারি সেক্রেটারি এলিস জি ওয়েলস মঙ্গলবার প্রতিনিধি পরিষদে অনুষ্ঠিত এক শুনানিতে এই উদ্বেগ পুর্নব্যক্ত করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সুবিধাভোগী হয়েও ভারত কর্তৃক কাশ্মীরে এমন দমন-নিপীড়ন অব্যাহত রাখায় তাতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশটির বেশ কয়েকজন সিনিয়র কর্মকর্তা।

এলিস তার বক্তব্যে বলেন, "মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মীরে ভারত কর্তৃপক্ষ যে পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে তার প্রভাব নিয়ে এখনো উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র।"

হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির এই শুনানিতে তিনি আরো বলেন, "আমরা ভারত সরকারকে বলেছি তারা যেন মানবাধিকারের বিষয়টিকে সম্মান জানায়। মোবাইল-ইন্টারনেট সংযোগসহ সব ধরনের সেবা কার্যক্রম যেন স্বাভাবিক করা হয় সে আহবান জানিয়েছি।"

এলিস বলেন, "কাশ্মীরের বাসিন্দাদের আটক অব্যাহত রাখা, বিশেস করে মূলধারার রাজনীতির সঙ্গে জড়িতদের আটক করার বিষয়েও আমরা উদ্বেগ বিষয়টি ভারতকে জানিয়ে দিয়েছি। এ উদ্বেগের আওতায় রয়েছে স্থানীয় এবং বিদেশি গণমাধ্যমের কাজে বাধা দেয়ার বিষয়টিও।"

শুনানিতে বাংলাদেশে সীমান্তবর্তী আসাম রাজ্যের নাগরিকদের জন্য যে বন্দিশিবির তৈরি করছে ভারত সে প্রসঙ্গেও কথা বলেন এলিস। আসামের নতুন তালিকায় নাগিরক্ত্ব থেকে বাদ পড়েছে প্রায় ১৯ লাখ মানুষ। কথিত অবৈধ বাসিন্দাদের ভারতে থাকতে দেয়া হবেনা বলে জানান দিয়ে আসছে মোদী সরকার।

মিয়ানমার সরকার কর্তৃক রোহিঙ্গা নির্যাতনের ভয়াবহতা প্রসঙ্গে হাউস রিপ্রেজেনটিটিভ ইলহান ওমর বলেন, "এদিকে দৃষ্টি দিলেই আমরা বুঝতে পারি কীভাবে রোহিঙ্গা গণহত্যার উত্থান হয়েছে।"

আসাম ইস্যুতে ভারতের কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, "কোন বিষয়টির জন্য আমরা এখনো ভারতের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ রেখেছি? আমরা কী চাচ্ছি ভারত সরকার আসামে যে বন্দিশিবিরগুলো তৈরি করছে সেখানে মুসলমানদের বন্দি করা হোক?"

ইলহানের এ বক্তব্যের বিষয়টিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত সহকারি সেক্রেটারি। তিনি বলেন আসামের নাগরিকত্বের এ বিষয়টি আদালতের একটি রায়ে তৈরি হয়েছে। বিষয়টিতে এখনো আপিল প্রক্রিয়াধীন আছে।

এলিস বলেন, "গণতান্ত্রিকতার জন্য গণতান্ত্রিক শাসনের এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ এবিষয়গুলোকে আমরা সম্মান করি।"

এলিসের এ কথার প্রেক্ষিতে পাল্টা জবাব দিয়ে বসেন এশিয়া বিষয়ক হাউস সাব কমিটির প্রধান ব্র্যাড শেরম্যান। তিনি বলেন, "কোনো দেশ আইনের আশ্রয়ে যখন মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তখন এর মাধ্যমে মানবাধিকারের সুরক্ষা আর অবশিষ্ট থাকেনা।"

জিএস/