যে কারণে বরিসকে জেতাতে টাকা ঢালছেন ধনীরা

যে কারণে বরিসকে জেতাতে টাকা ঢালছেন ধনীরা

আগামী মাসেই নির্বাচন ব্রিটেনে। আসন্ন নির্বাচনে যে কোনো মূল্যে ব্রেক্সিটপন্থী রাজনীতিক ও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে জেতাতে চায় দেশটির ধনী ব্যবসায়ীরা। সেই লক্ষ্যে কাঁড়ি কাঁড়ি পাউন্ড ঢালছে তারা। শুধু দেশি ব্যবসায়ীরাই নন, মোটা অঙ্কের অর্থ দিচ্ছে বিভিন্ন বহুজাতিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানও।

এসব বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা অনেক কোম্পানি রয়েছে। বাইলাইন টাইমসের এক হিসাবে দেখা গেছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বরিস শিবিরকে দেয়া বিভিন্ন দাতাগোষ্ঠীর মোট অর্থের পরিমাণ প্রায় ৪৬০ কোটি পাউন্ড।

ব্রেক্সিট প্রচারণার জন্যও এসেছে আরও বিপুল পরিমাণ পাউন্ড। যোগ করলে পরিমাণটা দাঁড়ায় ৮৩০ কোটি পাউন্ডের কাছাকাছি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মের মতো বারবার চেষ্টা সত্ত্বেও ব্রেক্সিট সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়েছেন বরিস। ফলে আগাম নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। ১২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। এই নির্বাচনে আরও সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠন করতে চান বরিস। লক্ষ্য একটাই- যে কোনোভাবে ব্রেক্সিট চুক্তি সম্পন্ন করা।

কিন্তু চুক্তি হোক বা না হোক, তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই ব্রিটেনের ধনীদের। তাদের একমাত্র ভয় বামঘেঁষা প্রভাবশালী রাজনীতিক ও লেবার নেতা জেরেমি করবিনকে। করবিন প্রধানমন্ত্রী হলে নতুন কর আরোপ, মূলধন নিয়ন্ত্রণ জারি এবং বেসরকারি স্কুলগুলো লেবার সরকারের রোষের মুখে পড়তে পারে।

কোটি কোটি পাউন্ড হারাতে পারে শীর্ষ ধনীরা। আর তাই করবিনের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি জিতলে পরদিনই দেশ ছেড়ে যেতে স্যুটকেস গুছিয়ে রেখেছেন তারা। বরিস প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, ফের প্রধানমন্ত্রী হলে বড় ধরনের কর ছাড়সহ নানা সুযোগ-সুবিধা দেবেন ধনীদের। আর এজন্য তার জয় নিশ্চিত করতে একেবারের উঠেপড়ে লেগেছে ধনীরা।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে খ্যাত ব্রিটেন। কিন্তু দেশটির কয়েক শতকের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য ও মূল্যবোধ এখন ধ্বংসের পথে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রধান শর্ত সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন।

কিন্তু সেই নির্বাচনের পরতে পরতে চলে কালো টাকার খেলা। নির্বাচনী নানা আচরণবিধি এখন কেবল ‘এক টুকরো কাগজ’ ছাড়া আর কিছুই নয়। অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই চলে বড় ব্যবসায়ীদের টাকায়।

কিন্তু দলগুলোর চাঁদা নেয়ার ক্ষেত্রে নিয়মকানুন খুব কমই মানা হয়। দলগুলো কোটি কোটি টাকা খরচ করে নির্বাচনে লড়ে, এসব টাকার অধিকাংশই আসে কালো টাকার কারবারিদের থেকে।

গ্লোবাল রিসার্চের চলতি সপ্তাহের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক মাস আগেই ব্রিটেনের জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা অবৈধ অর্থের লেনদেনের কারণে ইলেকটোরাল কমিশন স্কটিশ ইউনিয়নিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ট্রাস্ট (এসইউএটি) নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে।

২০১৮ সালে প্রায় ১৪ মাসের তদন্ত শেষে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে স্কটিশ কনজারভেটিভ পার্টিকে ২ লাখ পাউন্ড দেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়।

এমজে/