নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে মুম্বাইয়ের আইজিপির পদত্যাগ

নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে মুম্বাইয়ের আইজিপির পদত্যাগ

ভারতে রাজ্যসভায় বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল-২০১৯ (সিএবি) পাস হয়েছে। এই বিলের বিরোধিতায় উত্তাল পুরো ভারত। সেই বিলের বিরোধিতা করে পদত্যাগ করলেন এক পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি মুম্বাইয়ের আইজিপি আবদুর রহমান।

তার অভিযোগ, পাস হওয়া সেই নাগরিকত্ব বিল অসংবিধানিক এবং সম্পূর্ণ সাম্প্রদায়িক। মুম্বাইয়ের আইজিপি আবদুর রহমান বৃহস্পতিবার থেকেই আর কার্যালয়ে আসবেন না বলে জানান।

বুধবার সন্ধ্যায় রাজ্যসভায় পাস হয়েছে বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিল। রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করলেই আইনে পরিণত হবে এই বিল। বিলে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান পাকিস্তান, বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় পীড়নের কারণে এ দেশে শরণার্থী হিসেবে হিন্দু, পার্সি, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা আশ্রয় নিতে বাধ্য হলে, তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। সেখানে প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা মুসলিমদের বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই। এই বিলকে সাম্প্রদায়িক ও সংবিধান পরিপন্থী বলেও সরব হয়েছেন বিরোধীরা। এবার সেই একই সুর মুম্বাইয়ের পদত্যাগী আইজির গলাতেও।

এ বিষয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তার দাবি, এই বিল দেশের ধর্মীয় বহুত্ববাদ বিরোধী। আমি দেশবাসীর কাছে গণতান্ত্রিক উপায়ে এই বিলের প্রতিবাদ করার আর্জি জানাচ্ছি। এটি সংবিধানের কাঠামো বিরোধীও বটে।

পুলিশ কর্মকর্তা আবদুর রহমান বলেন, আমি বিলের তীব্র বিরোধিতা করছি। এটি আমাদের সংবিধান পরিপন্থী। এই বিল পাসের প্রতিবাদে আমি চাকরি থেকে ইস্তফা দিচ্ছি।

তবে এখানেই শেষ নয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে সরাসরি মিথ্যাচারেরও অভিযোগ এনেছেন রহমান।

তিনি বলেছেন, সংসদে বিল পেশ ও বির্তকের সময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একের পর এক ভ্রান্ত তথ্য, পরিসংখ্যান দিয়েছে। এমনকি ইতিহাসও বিকৃত করেছেন তিনি।

ওই শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তার অভিযোগ, ভারতের মুসলিমদের মনে ভয় ধরাতেই এই বিল আনছে সরকার। দেশের মধ্যে বিভেদ তৈরি করাই কেন্দ্রীয় সরকারের লক্ষ্য। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারার পরিপন্থী এই বিল।

পুলিশ সূত্র বলছে, গত আগস্ট মাসেই ভিআরএস বা ভলান্টিয়ারি রিটায়ারমেন্টের জন্য আবেদন করেছিল আবদুর রহমান। এই কয়েক মাস সেই আবেদন মঞ্জুরির অপেক্ষাই ছিলেন তিনি।