উত্তাল ভারতের ১৩ শহর, মেঙ্গালুরু-লখনৌতে পুলিশের গুলিতে নিহত ৩

উত্তাল ভারতের ১৩ শহর, মেঙ্গালুরু-লখনৌতে পুলিশের গুলিতে নিহত ৩

নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঢেউয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারতের রাজধানী দিল্লিসহ অন্তত ১০টি রাজ্যের ১৩টি শহর।

আন্দোলন দমাতে পুলিশের গুলিতে কর্নাটনের মেঙ্গালুরুতে দু’জন, লখনৌতে একজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া, কারফিউ জারি করা হয়েছে মেঙ্গালুরুতে।

এছাড়া দেশজুড়ে আটক ও গ্রেফতার করা হয়েছে বহু মানুষকে।
বেঙ্গালুরুতে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে জমায়েত থেকে ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। দিল্লিতে আটক হন সীতারাম ইয়েচুরি, ডি রাজা, নীলোৎপল বসু, বৃন্দা কারাট, যোগেন্দ্র যাদব, উমর খালিদের মতো নেতারা।

সব চেয়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কর্নাটক ও উত্তর প্রদেশে।

লখনৌয়ের মাদেগঞ্জে জনতার সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ বাধে। একটি পুলিশ ফাঁড়ির বাইরে একাধিক গাড়িতে আগুন লাগানো লাগিয়ে দেয় জনতা।

লখনৌতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মুহাম্মদ উকিল (২৫) নামের এক যুবক। পরিবারের অভিযোগ, সংঘর্ষের এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ তাকে গুলি করে। যদিও স্থানীয় ডিজি’র দাবি, এই মৃত্যুর সঙ্গে বিক্ষোভের আদৌ যোগ নেই।

উত্তরপ্রদেশের সম্ভলেও আক্রান্ত হয়েছে থানা। জ্বালানো হয়েছে সরকারি বাস। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট।

বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, “সিসিটিভি এবং ভিডিও এদের দেখা গেছে। এর বদলা নেওয়া হবে।”

তার হুঁশিয়ারি, সরকারের ক্ষতি পূরণ করতে প্রয়োজনে বিক্ষোভকারীদের সম্পত্তি নিলাম হবে।

সূত্রের খবর, মেঙ্গালুরুতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন জলিল (৪৯) এবং নৌশিন (২৩) নামের দুজন।

পুলিশের দাবি, বিক্ষোভকারীরা মেঙ্গালুরু নর্থ থানা দখল করতে এলে গুলি চালানো হয়।

বেঙ্গালুরুর টাউন হলের সামনে দাঁড়িয়ে একটি চ্যানেলকে রামচন্দ্র গুহ বলছিলেন, “শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চলছিল। বেচারা পুলিশকে দিল্লির সরকার নির্দেশ দিচ্ছে। পুলিশ সবাইকে তাড়াচ্ছে, জেলে নিয়ে যাচ্ছে।”

সে সময়ে তিন পুলিশ সদস্য তাকে টেনে বাসে তোলেন। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে রামচন্দ্রকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

তবে বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ ছিল কলকাতা, চেন্নাই ও মুম্বাইয়েও। “আমরা কি সমান? ধর্মনিরপেক্ষ? হ্যাঁ”— স্লোগান ওঠে মুম্বাইয়ের আগস্ট ক্রান্তি ময়দানে। গুজরাটের আহমেদাবাদে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ হয়। তেলঙ্গানায় বামেরা, সংখ্যালঘুদের সংগঠনসহ বহু মিছিল হয়। হায়দারাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র আটক হন। পাটনায় বাসে-গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন জন অধিকার পার্টির কর্মীরা। বাম ছাত্র সংগঠনগুলো রেল অবরোধ করে। মধ্যপ্রদেশের ১২টি জেলায় বিক্ষোভ হয়। কংগ্রেসের প্রশ্ন, শুধু বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোতেই সহিংসতা ছড়াল কেন? সূত্র: আনন্দবাজার

এমজে/