চীনে ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৭

চীনে ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৭

চীনের ‘রহস্যময়’ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটির উহানে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ জনে। গতকাল বুধবার দেশটির রাষ্ট্রীয় টিভি প্রাদেশিক সরকারের উদ্ধৃতি দিয়ে মৃতের সংখ্যা বাড়ার এ খবর জানায়।

এদিকে নতুন নিউমোনিয়া সদৃশ এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৪৭ ছাড়িয়ে গেছে বলে সিএনএন’র প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।খবরে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যে ভাইরাসটি আরও প্রায় সাতটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, যা বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ও শঙ্কা তৈরি করেছে।

গত বছরের শেষ দিকে চীনে হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে ভাইরাসটির উদ্ভব হয়। এরপর বেইজিং এবং বৃহত্তম শহর সাংহাই থেকে শুরু করে বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ে। এখন বিশ্বজুড়ে তা ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

চীনের বাইরে থাইল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, ম্যাকাউ এবং হংকংয়ে ভাইরাসটির বিস্তার ঘটেছে। এ ছাড়া মঙ্গলবার নতুন এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রেও। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার কথা ভাবছে।’

এই করোনা ভাইরাস যুক্তরাষ্ট্রে শনাক্ত হওয়ার আগে থাইল্যান্ডে দুজন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানে একজন করে এ ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত করা হয়। তারা প্রত্যেকে চীনের উহান শহর থেকে ফিরেছিলেন।

এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে গত সপ্তাহ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রানসিসকো, লস অ্যাঞ্জেলেস এবং নিউইয়র্ক বিমানবন্দরে উহান হতে আগত যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং, তাইওয়ান ও জাপানের বিমান বন্দরেও একই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এ ছাড়া সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে উত্তর কোরিয়া বিদেশি পর্যটকদের জন্য তাদের সীমান্ত সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে।

ভাইরাসটির সংক্রামণে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। বিজ্ঞানী ও গবেষকরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, বাজার অথবা মার্কেটের মতো জায়গা থেকে এটি বেশি ছড়ায়, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এর গতিবিধি ও এক দেহ থেকে আরেক দেহে কীভাবে ছড়ায় এটি এখনো অস্পষ্টই রয়ে গেছে। নতুন এ ভাইরাসটি করোনা ভাইরাস গোত্রের।

২০০০ সালে একই গোত্রের সার্স ভাইরাসে ৭৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল, যাদের অধিকাংশই এশিয়া মহাদেশের। বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন ভাইরাসটির জেনেটিক কোড সার্স ভাইরাসের বেশ কাছাকাছি।

চীনের হুবেই প্রদেশে জনসমাবেশ নিরুৎসাহিত করা ও হাসপাতালের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কঠোর করার মতো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে কর্তৃপক্ষ এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে।

চীনের স্বাস্থ্য কমিশন দেশজুড়ে নাগরিকদের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলো এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে ও হুবেই প্রদেশের কর্তৃপক্ষকে ছুটির দিনগুলোতে জনসমাবেশ কমানোর নির্দেশ দিয়েছে।

এমজে/