‘ডিল অব দ্যা সেঞ্চুরি’ মানবে না ফিলিস্তিন, বিশ্বের জন্য ‌‘দুঃস্বপ্ন’ আখ্যা ইরানের

‘ডিল অব দ্যা সেঞ্চুরি’ মানবে না ফিলিস্তিন, বিশ্বের জন্য ‌‘দুঃস্বপ্ন’ আখ্যা ইরানের

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ বলেছেন, আমেরিকার উপস্থাপিত কথিত শান্তি চুক্তি ‘ডিল অব দ্যা সেঞ্চুরি’ মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্বের জন্য একটি দুঃস্বপ্ন। তিনি মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ওই একতরফা আপোষ চুক্তি উপস্থাপনের পর এক টুইটার বার্তায় ওই মন্তব্য করেন।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বার্তায় কথিত এই ‘শতাব্দির সেরা চুক্তি’কে একটি ব্যর্থ লেনদেন থেকে উৎসারিত ‘কল্পনাপ্রসূত প্রকল্প’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এই পরিকল্পনা উত্থাপনের ফলে বিশ্বের সকল মুসলমান উদাসীনতার ঘুম থেকে জেগে উঠবে এবং একথা উপলব্ধি করবে যে, আমেরিকা ও ইহুদিবাদী ইসরাইল মিলে এতদিন তাদেরকে বিভ্রান্ত করে এসেছে।

ফিলিস্তিনিদের প্রবল বিরোধিতা উপেক্ষা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত ইহুদিবাদী পরিকল্পনা ‘ডিল অব দ্যা সেঞ্চুরি’ উপস্থাপন করেছেন। তিনি মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে পাশে নিয়ে তার একপেশে এই আপোষ প্রক্রিয়া উপস্থাপন করেন।

ফিলিস্তিনের স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, আমি হাজার বার বলেছি, এ পরিকল্পনা মানি না, মানি না, মানি না।

‘ডিল অব দ্যা সেঞ্চুরি’ উপস্থাপনের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে কথা বলার জন্য তাকে টেলিফোন করলেও তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেছেন, যে পরিকল্পনায় জেরুজালেম আল-কুদসকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের কথা না থাকছে সে পরিকল্পনা তিনি মেনে নেবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র-ইহুদিবাদী এই পরিকল্পনায় ঐতিহাসিক জেরুজালেম আল-কুদস শহরকে ইসরাইলি ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সেইসঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত ফিলিস্তিনি শরণার্থীদেরকে তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এ ছাড়া, জর্দান নদীর পশ্চিম তীরের অবশিষ্ট অংশ ও গাজা উপত্যকা নিয়ে একটি দুর্বল ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়েছে।

এমন সময় ফিলিস্তিনি জনগণকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে একটি ইহুদিবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য এ পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়েছে যখন জেরুজালেম আল-কুদস’সহ গোটা অধিকৃত ভূখণ্ডের মালিক ফিলিস্তিনি জনগণ। ইহুদিবাদীরা ফিলিস্তিনিদের ভূমি জবরদখল করে ইসরাইল নামক অবৈধ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে।

অবশ্য ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকার উপেক্ষা করে তৈরি করা এই পরিকল্পনার প্রতি সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনসহ আরো কিছু আরব দেশ সমর্থন জানিয়েছে।