দিল্লির মসজিদে অগ্নিকাণ্ডে জড়িত পুলিশ: ওয়াশিংটন পোস্ট

দিল্লির মসজিদে অগ্নিকাণ্ডে জড়িত পুলিশ: ওয়াশিংটন পোস্ট

ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে দিল্লিতে কমপক্ষে তিনটি মসজিদে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষোভ-সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এ ছাড়া আহত হয়েছে আরও দুই শতাধিক মানুষ। হামলা ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বহু বাড়ি-ঘর এবং দোকান-পাটে। এ সহিংসতায় দুর্বৃত্তদের সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট এই সহিংসতায় পুলিশের ভূমিকা রয়েছে জানিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বলা হয়, টানা কয়েকদিন ধরে সহিংসতায় উত্তাল হয়ে উঠেছে উত্তর-পূর্ব দিল্লির বিভিন্ন স্থান। এ ঘটনায় এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে পুলিশ। উন্মত্ত জনতার সহিংসতা বন্ধের চেষ্টাও করেনি তারা। বরং সহিংসতাকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে ‘জয় শ্রী রাম’ বলে স্লোগান দিচ্ছিল তারা। মসজিদে আগুন দেওয়াতেও পুলিশ জড়িত।

এদিকে গতকাল বুধবার দিল্লি পুলিশের মুখপাত্র এম এস রান্ধওয়া জানান, দিল্লির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পর্যাপ্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। একই সঙ্গে আধাসামরিক বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

অথচ মূল চিত্র ভিন্ন। বিভিন্ন স্থানে বাড়ি ঘর জ্বলতে দেখা গেছে। রাস্তায় রাস্তায় গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরে এই দাঙ্গা পরিস্থিতি চললেও এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার বিকেলে তিনি দিল্লিবাসীকে শান্ত থাকতে ও শান্তি ও ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে একটি টুইট করেন।

এর পরপরই দাঙ্গাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর নির্দেশনায় এলাকাগুলো পরিদর্শনে নেমেছেন।

অবিচল দুবে নামে ভারতীয় একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমের এক সাংবাদিক ওয়াশিংটন পোস্টকে জানিয়েছেন, মোদির ক্ষমতাসীন বিজেপি দলের হয়ে প্রায় ২০০ জনের একটি দল অশোক নগরে জয় শ্রী রাম বলে স্লোগান দিচ্ছিল। পুলিশও তাদের সঙ্গে ছিল। তারা সেখানকার বেশ কিছু দোকান-পাটে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। অনেকেই একটি মসজিদের মিনার বেয়ে উঠে এর মাইক ভেঙে ফেলে। তারা সেখানে গেরুয়া রংয়ের হনুমান পতাকা এবং ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে।

তবে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাহিনীর মুখপাত্র রান্ধওয়া। তিনি বলেন, ‘এমন কোনো ঘটনার প্রমাণ পেলে প্রশাসন অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’