করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর সংখ্যা ৮৭ হাজার ছাড়িয়েছে

করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর সংখ্যা ৮৭ হাজার ছাড়িয়েছে

করোনাভাইরাস মহামারীতে মৃত্যুর সংখ্যা ৮৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

বুধবার দিবাগত রাত ১টায় ওয়ার্ল্ডওমিটার ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৪ লাখ ৯৫ হাজার ৫৯৮ জন। এর মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন ৮৭ হাজার ৬০৩ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৩ লাখ ১৯ হাজার ১৬০জন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, করোনা রুখতে হলে পরীক্ষার হার বাড়াতে হবে। এ কারণে দৈনিক ২৫ হাজার করোনা পরীক্ষার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে পাকিস্তান। খবর বিবিসি, এএফপি ও রয়টার্সসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের।

এদিকে মৃত্যুর সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে ইতালি। ইউরোপের এ দেশে এ পর্যন্ত সাড়ে ১৭ হাজারেরও বেশি মারা গিয়েছেন। দ্বিতীয় স্থানে স্পেন, দেশটির ১৪ হাজার ৬৭৩ জন এ মহামারীতে প্রাণ হারিয়েছেন। তৃতীয় স্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের মৃতের সংখ্যা ১৪ হাজার ২৪১ জন। এরপরেই রয়েছে ইউরোপের আরেক পরমাণু শক্তিধর দেশ ফ্রান্স। দেশটির সাড়ে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনাভাইরাস মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এছাড়াও যুক্তরাজ্যের ৭ হাজারেরও বেশি নাগরিক এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়। তবে এখন চীনে পরিস্থিতি প্রায় নিয়ন্ত্রণে; যদিও গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে। তবে দেশটির ন্যাশনাল হেলথ কমিশন জানিয়েছে, এদের বেশিরভাগই বিদেশি নাগরিক। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮১ হাজার ৮০২, মারা গেছেন ৩ হাজার ৩৩৩ জন। বুধবার চীনের উহানে আড়াই মাস ধরে চলা লকডাউন তুলে নেয়া হয়েছে। এতে দীর্ঘদিন পর শহরটি প্রাণচাঞ্চল্যে মুখর হয়ে ওঠে।

জার্মানিতে আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়ালেও মৃতের সংখ্যা ২ হাজারের সামান্য বেশি, যা বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসের চেয়েও কম। ইউরোপে সবচেয়ে বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাওয়া ইতালি ও স্পেনে পরিস্থিতির ক্রমেই উন্নতি ঘটছে। মৃতের সংখ্যায় শীর্ষে থাকা ইতালিতে এ পর্যন্ত ১৭ হাজার ১২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৫৮৬ জন। ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৬০৪ জনের।

মৃতের সংখ্যায় বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা স্পেন আক্রান্তের সংখ্যাও দ্বিতীয়। দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৪৬ হাজার ৬৯০, মারা গেছেন ১৪ হাজার ৫৫৫ জন। ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৫১০ জনের।

রাশিয়ায় হঠাৎ আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১১৭৫ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্ত ৭ হাজার ৪৯৭, মোট মৃত্যু হয়েছে ৫৮ জনের।

ইরানে ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১২১ জন। দেশটিতে মোট মৃত্যু ৩ হাজার ৯৯৩, আক্রান্ত ৬৪ হাজার ৫৮৬ জন।

দক্ষিণ এশিয়ার ভারতে একদিনে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫ হাজার ৩৫১ জন। এর মধ্যে ১ হাজারের বেশি রোগী মহারাষ্ট্রের। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬০ জনে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাতটি এলাকাকে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এখন ওই সব এলাকার ওপর রাজ্য সরকার নজরদারি শুরু করেছে। মঙ্গলবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। অন্যদিকে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৪২টি এলাকাকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

পাকিস্তানে একদিনে দুই শতাধিক নতুন রোগী পাওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৪ হাজার ৩৫ জন। আক্রান্তের অর্ধেকই পাঞ্জাবের। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৭ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৪ জন। মঙ্গলবার থেকে দেশটিতে পরীক্ষার হার বাড়ানো হয়েছে। দিনে অন্তত ২৫ হাজার জনকে করোনা পরীক্ষার আওতায় আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে দেশটি।

করোনাভাইরাস ঠেকিয়ে রেখে প্রশংসিত সিঙ্গাপুর সরকার এবার সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছে। বুধবার তাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ আদেশ দেয়। সিঙ্গাপুরে এ পর্যন্ত ১৪৮১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের।

এমজে/