দলের পদও খুয়ালেন মাহাথির

দলের পদও খুয়ালেন মাহাথির

মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে এ যেনো আরেক ধাক্কা। আরেক বাঁক-বদল। প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ার রাজনীতির খেলায় শেষতো আপন ঘরেই অচেনা হয়ে গেলেন দেশটির বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মাহাথির মোহাম্মদ।

নিজের প্রতিষ্ঠিত দল ইউনাইটেড ইনডিজিনিয়াস পার্টি (বেরসাতু) বহিষ্কার করেছে তাঁকে। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বেরসাতু জানিয়েছে, মাহাথিরের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।

আধুনিক মালয়েশিয়ার রুপকার ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের এক নাটকীয় ছন্দপতন!

গত ১৮ই মে পার্লামেন্টের এক অধিবেশনে বিরোধী দলের সাংসদদের সঙ্গে বসার পর বহিষ্কৃত হয়েছেন বেরসাতুর সাবেক এই চেয়ারম্যান।

খবরে বলা হয়, মালয়েশিয়ার বর্তমান বেরসাতু নেতৃত্বাধীন সরকারকে সমর্থন না জানানোয় দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন মাহাথির। দেশটির বর্তমান সরকার প্রধান হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী ও বেরসাতুর প্রেসিডেন্ট মুহিদ্দিন ইয়াসিন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বেরসাতুর এক চিঠি অনুসারে, ১৮ই মে বিরোধীদলের সঙ্গে বসে প্রধানমন্ত্রী ও বেরসাতুর চেয়ারম্যান হিসেবে মুহিদ্দিনের নেতৃত্বকে প্রত্যাখ্যান করার প্রতিশ্রুতি করেছেন মাহাথির। এতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেরসাতুর সদস্য থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন তিনি। মুহিদ্দিনের এক সহযোগী ওই চিঠির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

বহিষ্কারের বিষয়ে মাহাথিরের কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাতক্ষণিকভাবে কোনো সাড়া পায়নি আল জাজিরা।

গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ সরকার প্রধান ছিলেন ৯৫ বছর বয়সী মাহাথির।

সে সময় আচমকা দলের ভেতর ক্ষমতা নিয়ে লড়াইয়ের পর তার নেতৃত্বাধীন জোট ভেঙে গেলে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। দেশটির ইতিহাসে অন্যতম এক রাজনৈতিক সংকট দেখা দেয়। অবশেষে বেরসাতুর অপর এক সহ-প্রতিষ্ঠাতা মুহিদ্দিন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে লড়তে মাহাথিরের সঙ্গে যোগ দেয়া মুহিদ্দিন এবার মাহাথিরের বিরুদ্ধে শক্তি জোগাড়ে নাজিবের সঙ্গে যোগ দেন। তার দল ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের সঙ্গে জোট গঠন করে নতুন সরকার গড়েন।

মুহিদ্দিনের নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানান মাহাথির। পদত্যাগের পর ফের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ১৮ই মে নতুন সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের আহ্বানও জানান। তবে বাদশাহ আব্দুল্লাহর হস্তক্ষেপে সেদিন ওই ভোট হয়নি। এ পদক্ষেপে ক্ষিপ্ত হয়ে মাহাথির বলেন, মালয়েশিয়ায় গণতন্ত্রের মৃত্যু হয়েছে।

প্রসঙ্গত, মাহাথিরের সঙ্গে বেরসাতুর আরো চার নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে তার ছেলে মুখরিজ মাহাথিরও রয়েছেন।