ভারতে ঢুকে হামলা চালিয়েছে নেপাল পুলিশ: আনন্দবাজার পত্রিকা

ভারতে ঢুকে হামলা চালিয়েছে নেপাল পুলিশ: আনন্দবাজার পত্রিকা

সম্প্রতি নেপাল পুলিশের গুলিতে এক ভারতীয় নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে কলকাতাভিত্তিক আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ভারতীয় সীমানার অভ্যন্তরে প্রবেশ করেই ওই পুলিশি হামলা চালানো হয়েছে।

শুক্রবার বিহারের সীতামারীর ইন্দো-নেপাল সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় সংঘটিত সেই ঘটনায় আহত হয় আরও দুজন। এছাড়া লগন যাদব নামে এক ভারতীয়কে গ্রেপ্তার করে নেপাল পুলিশ। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ঘটনার পর ১৩ জুন নেপালের সীমান্তরক্ষী বাহিনী 'নেপালিজ আর্মড পুলিশ ফোর্স'-এর অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক নারায়ণ বাবু থাপা ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেন, দক্ষিণ নেপালের সরলাহি জেলায় শূন্য রেখা থেকে নেপালের ৭৫ মিটার অভ্যন্তরে ওই অপ্রীতিকর ঘটনার উদ্ভব হয়। তার দাবি, ২৫-৩০ জন ভারতীয় নেপালি পুলিশ সদস্যের ওপর চড়াও হয়। তাদের লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে। পুলিশ ১০ রাউন্ডের মতো ফাঁকা গুলি ছুড়তে বাধ্য হয়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। নেপাল পুলিশ আরও দাবি করে, উত্তেজিত ভারতীয়রা তাদের অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।

তবে বুধবার আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে স্থানীয়দের বরাতে দাবি করা হয়, নেপাল পুলিশ ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকেই গুলি করে ভারতীয় নাগরিকদের। সীমান্তবর্তী জানকীনগরের বাসিন্দা নীতীশ কুমার বলেন, ‘প্রায় এক ঘন্টা ধরে দফায় দফায় গুলি চলেছিল। ১০-১২ রাউন্ড গুলি ছোড়ে নেপালের বাহিনী।’ আরেক গ্রামবাসী অজিত কুমার বলেন, ‘নেপাল পুলিশকে আগে কখনও এমন আচরণ করতে দেখিনি।’

আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনার দিন আটককৃত স্থানীয় বাসিন্দা লগনকিশোর তার ছেলে ও পরিবারকে নিয়ে সীমান্ত লাগোয়া নেপালের গ্রামে পুত্রবধূর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সীমান্ত অতিক্রমের সময় তাকে আটকায় নেপাল পুলিশ।

লগনের দাবি, তর্কাতর্কি শুরু হলে হঠাৎই তাকে রাইফেলের বাট দিয়ে মারতে মারতে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন নেপাল সশস্ত্র পুলিশ। লগনের ছেলেকেও মারধর করা হয়। সে সময় কয়েকজন ভারতীয় কৃষক জমিতে কাজ করছিলেন। তারা ঘটনা দেখে এগিয়ে এলে নেপালি বাহিনী গুলি ছুড়তে শুরু করে। ঘটনাস্থলেই নিহত হন বিকাশ যাদব। উমেশ রাম, উদয় ঠাকুর-সহ তিন কৃষক আহত হয়।

লগন বলেন, গুলি চলার সময় আমি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলাম। সে সময় আমাকে আমাকে ভারতের এলাকায় ঢুকে ফের আটক করে নেপাল পুলিশ। সংগ্রামপুর চৌকিতে নিয়ে গিয়ে আমাকে মারধর করা হয়। জোর করে জবানবন্দি আদায় করে যে, আমি নেপালে ঢুকেছিলাম।

১৩ জুন সীমান্তের নো-ম্যানস ল্যান্ডে লগনকে ভারতীয় বাহিনীর হাতে তুলে দেয় নেপালের পুলিশ। ভারতীয় বাহিনীকে জানানো হয়, অস্ত্র ছিনতাইয়ের চেষ্টার অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, কাঁটাতারবিহীন লালবন্দি-জানকীনগর সীমান্তে কখনোই কোনো কড়াকড়ি ছিল না। পাসপোর্ট-ভিসার কোনো ঝামেলা না-থাকায় দুদেশের নাগরিকরা অবাধে আসা যাওয়া করতে পারেন। তবে সম্প্রতি সীমানা নিয়ে ভারত ও নেপালের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়েছে।

এমজে/