করোনা দ্রুত ছড়াচ্ছে রূপান্তরের মাধ্যমে: ফাউচি

করোনা দ্রুত ছড়াচ্ছে রূপান্তরের মাধ্যমে: ফাউচি

করোনাভাইরাসের এমনভাবে রূপান্তর ঘটেছে (মিউটেশন), যাতে এটি আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। হোয়াইট হাউসের স্বাস্থ্য পরামর্শক অ্যান্টনি ফাউচি গতকাল বৃহস্পতিবার এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, সম্ভাব্য মিউটেশন ও এর প্রভাবের বিষয়টি নিশ্চিত করতে গবেষণা চলছে। তবে এ নিয়ে সামান্য বিতর্ক রয়েছে।

ভাইরাস প্রাকৃতিকভাবে পরিবর্তিত হয় এবং বিজ্ঞানীরা এর আগে বলেছিলেন যে, তাঁরা করোনার ছোটখাটো মিউটেশন পর্যবেক্ষণ করেছেন, যা থেকে রোগের বিস্তার বা রোগ সৃষ্টির ক্ষমতা থুব বেশি প্রভাবিত হয় না।

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ও আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশন ডিজিজেসের পরিচালক ফাউচি যে সম্ভাব্য মিউটেশনের কথা বলছেন, সে সম্পর্কে প্রথম জানান লস অ্যালামস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির গবেষকেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁদের একটি নিবন্ধ 'সেল' সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়। গত মাসেই ফ্লোরিডার স্ক্রিপস রিসার্চ সেন্টারের ভাইরোলজিস্টরা সম্ভাব্য মিউটেশনের বিষয়ে সতর্ক করে বলেছিলেন, এটি ভাইরাল ট্রান্সমিশন বাড়িয়ে দেয়। তবে মিউটেশন কোন পর্যায়ে ঘটে সে বিষয়টি পরিষ্কার নয়।

দ্য জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের ড. হাওয়ার্ড বাচনারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফাউচি বলেন, এখানে যে তথ্য পাচ্ছি, এতে একটি একক মিউটেশনের ফলে ভাইরাসটি আরও বেশি প্রতিরূপ বা প্রতিলিধি তৈরি করতে পারে এবং তাতে ভাইরাসের সক্ষমতা আরও বাড়ে। এতে কোনো ব্যক্তির পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় কি না, তা অবশ্য আমাদের জানা নেই। এতে শুধু বোঝা যায়, ভাইরাস আরও ভালোভাবে প্রতিলিপি তৈরি করতে পারে এবং আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে।গবেষকেরা এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও জানান ফাউসি।

সারা বিশ্ব থেকে করোনার ৬০ হাজার ভিন্ন জেনেটিক সিকোয়েন্স সংগ্রহ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষক দল ও বৈশ্বিক গবেষকেরা নজর রাখছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষকেরা বলেন, সব ভাইরাসের বিবর্তন ঘটে বা তাদের জীবনকালে মিউটেশন ঘটে। করোনার মতো আরএনএ ভাইরাস অন্য ভাইরাসের চেয়ে দ্রুত মিউটেশন ঘটায়।কারণ, মানুষের ডিএনএর মতো আরএনএন ভাইরাসের কোনো প্রাকৃতিকভাবে ভুল পরীক্ষা করার পদ্ধতি নেই। এতে ভাইরাস নিজেকে ঠিক করতে পারে না। যেকোনো মিউটেশন তাকে যেকোনো অর্থপূর্ণ আচরণ পরিবর্তনের দিকে নিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা সম্ভাব্য মিউটেশন খুঁজে দেখতে জেনেটিক সিকোয়েন্সের ডেটাবেস তৈরি করেছে।

এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন বলেছিলেন, ভাইরাসের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক মিউটেশন আশা করা যায়। তবে ভাইরাসের বিশেষ কিছু দিক আছে, যা অনেক জটিল। যেমন স্পাইক প্রোটিন—যা থেকে এর নামকরণ হয়েছে। যদি ভাইরাসের বিশেষ মিউটেশন ঘটে থাকে, তবে ভ্যাকসিন উৎপাদনের ক্ষেত্রে তার প্রভাব পড়বে।

লস অ্যামালমের গবেষকেরা নির্দিষ্ট অ্যামাইনো অ্যাসিডে কিভাবে ভাইরাসটি প্রভাব ফেলে সে সম্পর্কে জানিয়েছেন। তারা মিউটেশন ঘটা ভাইরাস সংস্করণটিকে বলছেন—'ডি৬১৪জি'।

এমজে/