খাসোগি হত্যা মামলার সাক্ষী: তারা আমাকে তন্দুরের ওভেন জ্বালাতে বলেন

খাসোগি হত্যা মামলার সাক্ষী: তারা আমাকে তন্দুরের ওভেন জ্বালাতে বলেন জামাল খাসোগি। ফাইল ছবি

ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার ঘটনায় ২০ আসামির অনুপস্থিতিতে বিচার শুরু হয়েছে তুরস্কের আদালতে। শুক্রবার তুর্কি আদালতে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ওই সময় উপস্থিত সৌদি দূতাবাস কর্মী জাকি দামির জানিয়েছেন, খাসোগি তুরস্কের সৌদি দূতাবাসে ঢোকার পরই তন্দুর চুলা প্রায় এক ঘণ্টা জ্বালিয়ে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

এ হত্যাকাণ্ডটি বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হয়। খাসোগি হত্যার বিচারের প্রথম দিনে কনস্যুলেটের টেকনিশিয়ান জাকি দামির সাক্ষ্য দেন।

তিনি বলেন, খাসোগি তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিতে দূতাবাসে ঢোকার পর তাকে আবাসিক ভবনে ডাকা হয়। সেখানে পাঁচ–ছয়জন ব্যক্তি ছিলেন। তাঁরা আমাকে তন্দুরের ওভেন জ্বালাতে বলেন। সেখানে পরিবেশ থমথমে ছিল।

সৌদি রাজ পরিবারের সমালোচক ছিলেন সাংবাদিক জামাল খাসোগি। একারণেই তিনি দেশটি থেকে নির্বাসিত ছিলেন। খাসোগি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টে নিয়মিত কলাম লিখতেন।

২০১৮ সালের অক্টোবরে বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিতে জামাল খাসোগি ওই দূতাবাসে যান। এরপর থেকেই নিখোঁজ থাকেন তিনি। সে সময় দূতাবাসের বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন খাসোগির বাগদত্তা।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ বলছে, সৌদি প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান এই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দেন বলে তাদের ধারণা। তবে সৌদি কর্মকর্তারা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

খাসোগি হত্যা নিয়ে প্রথম থেকেই সরব ছিল তুরস্ক। দেশটি বরাবরই এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে উল্লেখ করেছে।

দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, পুলিশের ধারণা, হত্যাকারীরা খাসোগির লাশ পুড়িয়ে অথবা টুকরো করে কেটে উধাও করে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে।

সৌদি গোয়েন্দা বিভাগের সাবেক উপপ্রধান আহমেদ আল আসিরি ও রাজকীয় আদালতের সাবেক উপদেষ্টা সৌদ আল কাহতানির বিরুদ্ধে ভয়ানক উদ্দেশ্য নিয়ে হত্যায় প্ররোচিত করার অভিযোগ আনা হয়েছে। খাসোগিকে হত্যার জন্য আরও ১৮ আসামি তুরস্কে গিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

আসামিদের অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ চলছে। সৌদি আরবের পক্ষ থেকে এসব আসামিদের হস্তান্তর করার সম্ভাবনাও কম।

গত বছরের ডিসেম্বরে খাসোগি হত্যার ঘটনায় সৌদি আদালত পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ও তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

পরে খাসোগির পরিবার বলেছে, তারা হত্যাকারীদের ক্ষমা করেছে। সৌদি আইন অনুসারে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের মুক্তির অনুমোদন দিয়েছে। সূত্র: রয়টার্স।