করোনা নিয়ে ডব্লিউএইচওকে ৩২ দেশের ২৩৯ গবেষকের চ্যালেঞ্জ

করোনা নিয়ে ডব্লিউএইচওকে ৩২ দেশের ২৩৯ গবেষকের চ্যালেঞ্জ

করোনাভাইরাস নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) একেক সময় একেক রকম ব্যাখ্যা নিয়ে বিভ্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। এরই মধ্যে করোনা নিয়ে ডব্লিউএইচও’র আনুষ্ঠানিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন ৩২ দেশের ২৩৯ জন গবেষক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে লেখা এক খোলা চিঠিতে ওই গবেষকেরা বলেছেন, করোনাভাইরাস দীর্ঘসময় বাতাসে ভেসে থাকার মধ্য দিয়ে যে ভয়াবহ ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে; ডব্লিউএইচও সে ব্যাপারে যথাযথ সতর্কতা জারি করতে ব্যর্থ হয়েছে।

লস অ্যাঞ্জেলস টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন কেবল মাত্র দুই ধরনের সংক্রমণের মাধ্যমকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। একটি হলো আশপাশের সংক্রমিত ব্যক্তির কাছ থেকে শ্বাস প্রশ্বাসের ফোঁটা বা ড্রপলেটের মাধ্যমে অন্যের শরীরে ভাইরাস ঢুকে যাওয়া। অপরটি হচ্ছে কোনো কিছুর দূষিত পৃষ্ঠ স্পর্শ করার পর চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ করার মাধ্যমে সংক্রমিত হওয়া।

তবে বিশেষজ্ঞরা যুক্তি দেখিয়ে বলছেন, এসব কারণ ছাড়াও তৃতীয় আরেকটি মাধ্যমে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। কিন্তু সেটাকে উপেক্ষা করছে ডব্লিউএইচও।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, অতি ক্ষুদ্র কণা বা অ্যারোসোল কণা দীর্ঘ সময় ধরে বাতাসে ভেসে থাকতে পারে। এমনকি এসব কণা ছয় ফুট পর্যন্ত ভেসে থাকে। ফলে যে সব জায়গায় বাতাস কম বা আবদ্ধ, সে সব স্থানগুলো বিপজ্জনক করে তোলে করোনাভাইরাস। এসব জায়গায় ১ দশমিক ৮ মিটার দূরত্ব রেখেও কোনো লাভ হয় না। যেমন- ঘর, যাত্রীবাহী বাস, অন্যান্য যানবাহন ইত্যাদি।

অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে ভাইরাস সংক্রমণের এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। তারা শুধু বলছে এটি কেবল ইনটিউবেশনের মতো চিকিৎসা কার্যক্রমের সময় ছড়াতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনের কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি ও পরিবেশ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক লিডিয়া মোরাওস্কা বলেছেন, ‘করোনা ভাইরাস বাতাসে ভেসে থাকার বিষয়টি আমরা শতভাগ নিশ্চিত।’

বাতাসে ভাইরাস ভেসে থাকার বিষয়টি গুরুত্ব না দেওয়ায় তিনি জাতিসংঘের সংস্থাটিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে একটি খোলা চিঠি লিখেন। যেখানে ৩২টি দেশের মোট ২৩৯ জন গবেষক স্বাক্ষর করেছেন। যা আগামী সপ্তাহে একটি বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এই চিঠিতে স্বাক্ষরকারী কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নবিদ জোসে জিমনেজ বলেন, ‘অ্যারোসোল সংক্রমণ মানুষকে আতঙ্কিত করার জন্য নয়, আর ভাইরাস যে পরিবর্তন হয়েছে এমনটিও নয়। আমরা মনে করি ভাইরাসটি এইভাবেই (বাতাসে) সংক্রামিত হয়েছে। সুতরাং বিষয়টি জেনে পদক্ষেপ নিয়ে আমরা নিজেদের রক্ষা করতে পারি।’ সূত্র- লস অ্যাঞ্জেলস টাইমস।