ব্যাংককে জরুরি অবস্থা

ব্যাংককে জরুরি অবস্থা

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান-ওচা। গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিক্ষোভকারী রাজনৈতিক দলগুলোর কমপক্ষে ৪ নেতাকে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা থেকে এই জরুরি অবস্থা কার্যকর হয়েছে। এ খবর দিয়েছে থাইল্যান্ডের অনলাইন দ্য নেশন এবং বিবিসি।

প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান-ওচার পদত্যাগ দাবিতে এবং অসীম সম্মানের রাজার ক্ষমতাকে খর্ব করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হচ্ছে থাইল্যান্ডে। সেই বিক্ষোভের ধারাবাহিকতায় বুধবার দিবাগত শেষ রাতের দিকে বিক্ষোভকারীরা গভর্নর হাউজের বাইরে বিক্ষোভ করেন। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। সেখানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়েছে।

এরপরই টেলিভিশনে জরুরি অবস্থা ঘোষণা দেয় পুলিশ। বিক্ষোভকারীরা নিজেদেরকে ‘খানা রাতসাডোন ২৫৬৩’ বলে (পিপলস পার্টি ২০২০) হিসেবে অভিহিত করছে। অনলাইন দ্য নেশন পত্রিকা বলছে, নাং লোয়েং ক্রসিং পয়েন্ট থেকে নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা গ্রেপ্তার করেছে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেয়া পারিত ছিওয়ারাক এবং আনোন নামপাকে। এ ছাড়া গ্রেপ্তার করা হয়েছে ফানুফোং জাদনোক এবং প্রাসিত উথারোজকে। বিক্ষোভকারীরা ফিতসানুলোক রোড থেকে গভর্নমেন্ট হাউজের কাছে নাং লোয়েং ক্রসিংয়ের দিকে ধীর গতিতে অগ্রসর হয়। এ সময় তাদের গতি ধীর করে দেয় পুলিশ। তাদের দিকে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। এক পর্যায়ে তাদেরকে ওই এলাকা থেকে ছত্রভঙ্গ করে দিতে সক্ষম হয় পুলিশ।

ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটের দিকে গভর্নমেন্ট হাউজ এবং পুরো রাতচাদামনোয়েন নোক এভিনিউয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় পুলিশ। ঘোষণা করা হয় জরুরি অবস্থা। দিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে পুরো এলাকা পরিষ্কার করতে সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ সদস্যদের। পরে জনজীবন স্বাভাবিক হয়ে আসে। ওদিকে বিবিসি লিখেছে, ব্যাংককে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের পর সেখানে ইমার্জেন্সি ডিক্রি জারি করেছে থাই সরকার। এর অধীনে সেখানে বড় সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জরুরি ডিক্রির ঘোষণা টেলিভিশনে পড়ে শোনান পুলিশের এক কর্মকর্তা। এতে বলা হয়েছে, শান্তি ও শৃংখলা রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

এর আগে বিবিসির সাংবাদিক জানতে পারেন, বিক্ষোভের তিন মূল নেতাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেেছ। তারা হলেন মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী আনোন নাম্পা, ছাত্র অধিকার বিষয়ক কর্মী পারিত ছিওয়ারাক (তিনি পেঙ্গুইন নামেই বেশি পরিচিত) এবং পানুসায়া সিথিজিরাওয়াত্তানাকুল। তবে তাদেরকে গ্রেপ্তারের বিষয় থাই পুলিশ নিশ্চিত করেনি। উল্লেখ্য, ছাত্রদের নেতৃত্বে গণতন্ত্রপন্থি এই আন্দোলন থেকে প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান-ওচার পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে। রাজার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়ার আহ্বান করা হয়েছে। বিবিসির মতে, জরুরি অবস্থা স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।

উল্লেখ্য, থাইল্যান্ডে রাজাকে দেখা হয় অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে। তার সমালোচনা করা হয় না বললেই চলে। কিন্তু রীতি ভাঙ্গেন আনোন। রাজা যে ক্ষমতা ভোগ করেন তা কমিয়ে সংস্কারের আহ্বান জানান তিনি। ওই মাসের শেষের দিকে রাজকীয় আইন সংস্কারের দাবিতে ১০ দফা মেনিফেস্টো ঘোষণা করেন মিসেস পানুসায়া। এর মধ্য দিয়ে তিনি আন্দোলনে সবচেয়ে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন। এর আগেও তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল গত জুলাইয়ে। তাদের অপরাধ প্রতিবাদ বিক্ষোভ করা।

এমজে/