চীনা বিজ্ঞানীদের দাবি

করোনার উৎস বাংলাদেশ বা ভারত

করোনার উৎস বাংলাদেশ বা ভারত

করোনা মহামারীর উৎস নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক জারি রয়েছে। কখনো বলা হচ্ছে, চীনের উহান থেকেই এর উৎস। যদিও চীন বরাবর এটা অস্বীকার করেছে। এই যখন অবস্থা তখন চীন নতুন এক তত্ত্ব হাজির করেছে। চীনের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, এটা তাদের দেশ থেকে ছড়ায়নি। বাংলাদেশ বা ভারত থেকেই ছড়িয়েছে।

চীনের সাংহাই ইনস্টিটিউট ফর বায়োলজিক্যাল সাইন্সের গবেষকদের একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, গত বছরের ডিসেম্বরে উহানে প্রাদুর্ভাবের আগেই ভারতীয় উপমহাদেশে ভাইরাসটির অস্তিত্ব ছিল। বাংলাদেশ এ ব্যাপারে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

তবে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. মিরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেছেন, পরীক্ষা নিরিক্ষা না করে এখনই মন্তব্য করা ঠিক হবে না। করোনা বিষয়ক সরকারের কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ডা. রেদোয়ানুর রহমান বলেছেন, চীনের এই দাবি প্রমাণ করা খুবই কঠিন। কারণ এটা সম্পূর্ণ অনুমান নির্ভর। এর আগেও চীনা গবেষকরা জেনেটিক লিঙ্ক নিয়ে এ ধরনের পরীক্ষা চালিয়েছে। কিন্তু কিছুই প্রমাণ করতে পারেনি।

এই দাবি সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ মাইক রায়ান বলেছেন, সম্পূর্ণ অনুমান নির্ভর একটি গবেষণা নিয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া এটা ফলাও করে প্রচার করছে। করোনার উৎপত্তি চীনে নয় এটা বলার পেছনে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য নেই। জনস্বাস্থ্যের দিক থেকে এটা বলাই যায়, যেখানে ভাইরাসটির প্রথম সংক্রমণ ঘটেছিল সেখানেই তদন্ত করতে হবে।

চীনের গবেষক দলটি করোনার উৎস খুঁজতে ফাইলোজেনেটিক পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। তারা ধারণা করছেন, সবচেয়ে কম রুপান্তরিত রোগটাই ভাইরাসের আসল রুপ হতে পারে।

বাংলাদেশ ও ভারতে যেহেতু সবচেয়ে কম রুপান্তর ঘটেছে সে কারণে চীনা বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত ভাইরাসটির প্রথম সংক্রমণ উহানে হয়নি। তাদের ধারণা, বাংলাদেশ বা ভারতে এর প্রথম সংক্রমণ হয়েছিল।

বাংলাদেশ ও ভারতের পাশাপাশি সম্ভাব্য উৎস হিসেবে অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, সার্বিয়া, ইতালি, গ্রিস ও চেক প্রজাতন্ত্রের নাম উল্লেখ করেছেন চীনের এই বিজ্ঞানীরা। গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরাল জিনোমিক্স অ্যান্ড বায়োইনফরমেটিক্স বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডেভিড রবার্টসন চীনা বিজ্ঞানীদের গবেষণাপত্রটি খুবই ত্রুতিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন।

ওদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ৯০৮ জন।