বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা

শেষ সময়ে ইরানে হামলা চালাতে পারেন ট্রাম্প

শেষ সময়ে ইরানে হামলা চালাতে পারেন ট্রাম্প

ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই ইরানে বেপরোয়াভাবে সামরিক হামলা চালাতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ইরানের শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার প্রথম বার্ষিকীতে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির ফলে এমন আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এন্ড এরিয়া স্টাডিজের সহকারী পরিচালক ড্যানি পোস্টেল আল জাজিরাকে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ক্ষমতার মেয়াদ আর এক মাসেরও কম বাকি। এ সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে তার মিত্র, বিশেষ করে ইসরাইল ও সৌদি আরবের পক্ষ থেকে ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বেশ চাপে রয়েছেন ট্রাম্প। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।

এতে আরো বলা হয়, গত মাসে পারস্য উপসাগরের ওপর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বি-৫২ বোমারু বিমান উড়ে গিয়েছে। সর্বশেষ গত বুধবার এমনটি হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ইরানকে কাসেম সোলাইমানি হত্যার প্রতিশোধ নেয়া থেকে বিরত রাখার পদক্ষেপ নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

এ অবস্থায় আল জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ডানি পোস্টেল বলেছেন, ট্রাম্প খুব বেশি ক্ষতবিক্ষত। শেষ খেলার দৃশ্যে তাকে নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। তার হাতে এখন মাত্র কয়েক সপ্তাহ সময়। আমরা জানি তিনি চরম মাত্রায় উত্তেজনা সৃষ্টিকর আচরণ দেখাতে সক্ষম। তবে ইরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্প কোনো পদক্ষেপ নিলে তারাও ছেড়ে কথা বলবে না।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ জারিফ বলেছেন, ইরাক থেকে পাওয়া নতুন গোয়েন্দা তথ্য বলছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক প্ররোচনা চালানোর চেষ্টা করছে ইসরাইলি এজেন্টরা। এর ফলে বিদায়ী ট্রাম্পকে একটি ভুয়া অজুহাতের সুযোগ এনে দিতে পারে। বিস্তারিত না জানিয়ে জাভাদ জারিফ কোনো ফাঁদে পা না দেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্পের প্রতি।

তিনি সতর্কতা দিয়ে বলেছেন, যেকোনো গুলির জবাব দেয়া হবে আরো ভয়াবহভাবে।

এ সপ্তাহের শুরুতে কাসেম সোলাইমনির শাহাদাৎ বার্ষিকীতে কোনো রকম উত্তেজনা সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকতে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করে ইরান। জাভাদ জারিফ বলেছেন, ইরান কখনো যুদ্ধ চায় না। কিন্তু সব সময় তার জনগণ, নিরাপত্তা ও গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থের খোলাখুলি এবং সরাসরি পক্ষে অবস্থান নেবে।

একই দিনে ওয়াশিংটনের ‘সামরিক এডভেঞ্চারিজমের’ নিন্দা জানায় ইরান। তারা এমন নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি চিঠি লিখেছে। বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিহত কাসেম সোলাইমানি হত্যার কঠোর বদলা নেয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন ইরানের কর্মকর্তারা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রে নতুন প্রশাসন আসছে কয়েকদিনের মধ্যেই, তাই এ সময়ে ট্রাম্প প্রশাসন ইরানে কোনো সামরিক হামলার অজুহাত খুঁজে পাক এমনটা চায় না ইরান। এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেন নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে, তিনি ইরানের সঙ্গে সম্পাদিত পারমাণবিক চুক্তি পুনর্বহাল করবেন। এতে যোগ দেবে যুক্তরাষ্ট্র। এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে ২০১৮ সালে প্রত্যাহার করে নেন ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে তিনি ইরানকে কঠোর চাপে ফেলার কৌশল নিয়েছেন।