শ্রীলংকায় এবার বিচ্ছিন্ন দ্বীপে মুসলিমদের লাশ দাফন

শ্রীলংকায় এবার বিচ্ছিন্ন দ্বীপে মুসলিমদের লাশ দাফন

কঠোর সমালোচনার মুখে শ্রীলংকায় করোনায় মৃত মুসলিমদের লাশ পোড়ানো বন্ধ হলেও এখন শুরু হয়েছে নতুন নিয়ম।

শ্রীলংকা সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সংখ্যালঘু মুসলিম ও খ্রিস্টানদের কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে তাদের কবর দেওয়া হবে বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপে। খবর বিবিসির।

এর আগে সংখ্যালঘুদের মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলতে বা দাহ করতে বাধ্য করা হলে তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা হওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ইসলাম ধর্মে মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলার নিয়ম নেই। কিন্তু মহামারি শুরুর পর থেকেই শ্রীলংকা সরকার মুসলিমদের মরদেহও পোড়াতে বাধ্য করছিল। কিন্তু তীব্র সমালোচনা ও চাপের কারণে ভারত মহাসাগরের মান্নার উপসাগরের ইরানাথিবু দ্বীপটিকে এখন করোনায় মারা যাওয়া মুসলিম ও খ্রিস্টানদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

রাজধানী কলম্বো থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরের এ দ্বীপটিকে মরদেহ দাফনের জন্য নির্বাচিত করার কারণ হিসেবে এর কম ঘনবসতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও জাতিসংঘ এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তি তুলেছে।

সরকারি মুখপাত্র কেহেলিয়া রামবুকভেলার বরাত দিয়ে কলম্বো গেজেট জানিয়েছে, দ্বীপটির এক পাশে একটি জায়গা করোনা রোগীদের লাশ কবরের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের নিরাপদে দাফনের জন্য পর্যাপ্ত গাইডলাইন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আর মরদেহ পুড়িয়ে ফেললে সংক্রমণ ছড়াবে না এমন কোনো বৈজ্ঞানিক তথ্যও এখনও পাওয়া যায়নি।

মুসলিম ও খ্রিস্টান ধর্মীয় নেতারা শ্রীলংকা সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। শ্রীলংকা সলিম কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিলমি আহমেদ বলেন, ‘এটি একটি হাস্যকর সিদ্ধান্ত এবং একেবারেই বর্ণবাদী এজেন্ডা।’

এদিকে ওই দ্বীপের ধর্মযাজক মাধুথিন পাথিনাথার বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তে স্থানীয়রাও কষ্ট পেয়েছেন। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করি। এটি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য ক্ষতিকর হবে।

দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৪৫০ জন। কিন্তু এর মধ্যে ৩০০ জনই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সফরের পর সংখ্যালঘুদের দাফনের সিদ্ধান্তে আসে শ্রীলংকা সরকার।

এমজে/