দক্ষিণ আফ্রিকায় সহিংসতায় নিহত বেড়ে ৩০

দক্ষিণ আফ্রিকায় সহিংসতায় নিহত বেড়ে ৩০

সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা জেলে যাওয়ার জেরে দক্ষিণ আফ্রিকায় চলমান সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ জনে। আটক হয়েছে আরও আট শাতধিক। দেশটিতে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ বন্ধ এবং অর্থনৈতিক কেন্দ্রস্থল জোহানেসবার্গকে রক্ষায় মাঠে রয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। আদালত অবমাননার দায়ে ৮ জুলাই থেকে জুমার কারাজীবন শুরু হয়। খবর বিবিসির।

গত সোমবার দক্ষিণ আফ্রিকার সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, গৌতেং এবং কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশে আইন প্রয়োগকারী অন্য সদস্যদের সহায়তায় মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী।

মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ বলছে, যেভাবে লুটপাট চলছে তা আরও কিছু দিন অব্যাহত থাকলে দেশটিতে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের সঙ্কট দেখা দিতে পারে।

তবে এখনও পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিরক্ষামন্ত্রী নসিভিওয়ে মাপিসা-নাকাকুলা। তিনি বলেন, জরুরি অবস্থা জারি করার মতো অবস্থায় যায়নি দেশ।

এদিকে সোমবার জাতীয় টেলিভিশন ভাষণে দেশটির প্রেসিডেন্ট সাইরিল রামাফোসা বলেছেন, মারাত্মক সহিংসতা দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য দুটিকে আঁকড়ে ধরেছে। তিনি আরও বলেছেন, কয়েকদিন ধরে দিনরাত বিক্ষোভকারীদের সহিংসতা চলছে। সম্পত্তি ধ্বংস এবং এই ধরনের লুটপাট দেশটির ইতিহাসে খুব কমই দেখা গেছে।

আদালতের নির্দেশে গত সপ্তাহ থেকে ১৫ মাসের সাজাভোগ শুরু করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা। দুর্নীতির তদন্তকারীদের তথ্যপ্রমাণ দিয়ে সহযোগিতা না করায় তাকে এ দণ্ড দেন আদালত। প্রথমে তিনি আত্মসমর্পণে অস্বীকৃতি জানালে গ্রেফতারের সময়সীমা বেঁধে দেন দেশটির সাংবিধানিক আদালত। পরে অবশ্য জুমা ফাউন্ডেশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সাবেক প্রেসিডেন্ট আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

জেলে যাওয়ার আগে জুমা বলেছিলেন, ‘আমি জেলে যেতে প্রস্তুত। কিন্তু, এই বয়সে মহামারির সময়ে জেলে পাঠানোর মানে হচ্ছে আমার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা।’ তিনি আরও দাবি করেছিলেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পুরোপুরি অসত্য। তিনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। এরপর নানা নাটকীয়তা শেষে ৭৯ বছর বয়সী নেতা আত্মসমর্পণ করেন।

এর জেরেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে সহিংসতা শুরু হয়। জুমা-সমর্থকরা রাস্তঘাট অবরুদ্ধ রেখে দোকানপাট লুট করে। গত সপ্তাহ থেকে জ্যাকব জুমার নিজের এলাকা কোয়াজুলু-নাটাল এবং গৌতেং প্রদেশ থেকে এ সহিংসতা শুরু হয়। পরবর্তীতে সেটি দক্ষিণ আফ্রিকার বৃহত্তম শহর জোহানেসবার্গেও ছড়িয়ে পড়ে।